কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার বারবাকিয়া-রাজাখালী ইউনিয়নের টইটং খালের উপর ব্রীজের নির্মাণকাজ শুরু হওয়ায় স্বস্তির নিশ্বাস ছেড়েছিলেন এলাকার লোকজন। দুই বছর আগে কাজ শুরুর পর পাইলিংসহ অল্প কিছু কাজ শেষ করে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। এরপর লাপাত্তা হয়ে যায় ঠিকাদার। যার কারণে গত ছয় মাস ধরে সেখানে কাজ বন্ধ রয়েছে। এর ফলে ২ ইউনিয়নের হাজারো মানুষ এখনো দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। ঝুঁকিপূর্ণ ডাইভারশন সড়ক ব্যবহার করতে গিয়ে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে যানবাহন ও পথচারী লোকজন।
স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে সেতু নির্মাণের কাজ শেষ না হওয়ায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছে মানুষ।
পেকুয়া উপজেলা এলজিইডি অফিস সূত্রে জানা গেছে, রাজাখালী-মগনামা উপকূলীয় সড়কের টইটং খালের ওপর ৪০.০৬ মিটার দৈর্ঘ্য ও ৭.৩ মিটার প্রস্থের একটি আরসিসি গার্ডার ব্রিজ নির্মাণের কাজ শুরু হয় ২০২২ সালে। ২০২১-২২ অর্থবছরে এলজিইডি এ প্রকল্পের টেন্ডার আহ্বান করলে ‘মেসার্স আবুল কালাম আজাদ’ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ৭ কোটি ৯২ লাখ ৫৮ হাজার টাকায় কাজ বাস্তবায়নের দায়িত্ব পায়।
এরপর ঝুঁকিপূর্ণ পুরাতন ব্রিজ ভেঙে ফেলা হয় এবং বিকল্প হিসেবে পাশের খালের ওপর ডাইভারশন সড়ক নির্মাণ করা হয়। তবে দীর্ঘদিনেও অল্প কিছু কাজ শেষ হওয়ার পর ছয় মাস আগে কাজ বন্ধ হয়ে যায়।
সরেজমিনে দেখা যায়, সেতু নির্মাণের কাজ বন্ধ রয়েছে। সেতুর এক পাশে ডাইভারশন সড়ক ব্যবহার করে পারাপার যানবাহন ও স্থানীয়রা। ঝুঁকি নিয়ে চলছে ছোট বড় যানবাহন।
রাজাখালী গ্রামের বাসিন্দা মোস্তাক আহমদ তাঁরা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এখানে সেতুর কাজ বন্ধ। ঠিকাদার নেই, সরকারি লোকজনেরও খোঁজ নেই। এই সেতু এখন গ্রামবাসীর কষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তিনি আরো জানান, পাইলিং কাজের সময় পড়ে গিয়ে একজন শ্রমিকের মৃত্যু হওয়ার পর থেকে কাজ আর এগোয়নি। এরপর থেকে ঠিকাদারও গা-ঢাকা দিয়েছেন।
রাজাখালী টেকঘোনা পাড়ার বাসিন্দা আবু ছিদ্দিক বলেন, ব্রিজের কারণে মানুষের কষ্ট বেড়েই চলছে। দ্রুত কাজ শুরু করার জোর দাবি জানাচ্ছি।
রাজাখালী ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা আল আমিন জানান, হাজার হাজার মানুষের একমাত্র চলাচল এ সেতুর মাধ্যমে হয়। হঠাৎ কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় স্কুল/স্কুল/মাদ্রাসাগামী শিক্ষার্থী ছাড়াও যানবাহন চলাচল করতে খুবই কষ্ট নিয়ে। ডাইভারশন সড়কও খুবই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। তাই সেতুটি দ্রুত সংস্কার করার দাবী জানাচ্ছি।
বারবাকিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এএইচএম বদিউল আলম জিহাদি বলেন, এটি দুই ইউনিয়নের মানুষের জন্য একমাত্র সংযোগ সেতু। কাজ বন্ধ থাকায় প্রতিদিন হাজারো মানুষ কষ্ট পাচ্ছে। যত দ্রুত সম্ভব নতুন ঠিকাদার নিয়োগ দিয়ে কাজ শেষ করার দাবি জানান।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) পেকুয়া উপজেলা প্রকৌশলী সৌরভ দাশ বলেন, আগের ঠিকাদারের কার্যাদেশ বাতিল করে জরিমানা করা হয়েছে। নতুন টেন্ডার সম্পন্ন হয়েছে। এক মাসের মধ্যেই কাজ শুরু হবে।