মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির সঙ্গে সামরিক জান্তার তুমুল লড়াইয়ে প্রাণে বাঁচতে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গারা প্রায় প্রতিদিন বাংলাদেশে ঢুকছে। সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশকারী এ রোহিঙ্গারা ছড়িয়ে পড়েছে কক্সবাজারের উখিয়ার বিভিন্ন এলাকায়। এদের একটি বড় অংশ কুতুপালং পশ্চিমপাড়ায় বিভিন্ন বাড়িতে ভাড়াটিয়া হিসেবে থাকছে। কেউ কেউ ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছে।
গত সোমবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত মিয়ানমার সীমান্তবর্তী উখিয়ার বিভিন্ন এলাকা ও লোকালয় ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে। উখিয়া ও কুতুপালংয়ের আশপাশে ভাড়া দেওয়ার মতো বাড়ির সংখ্যা শতাধিক। এর প্রায় সবটাতেই এখন রোহিঙ্গা ভাড়াটিয়া। এর বেশির ভাগই বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেছে গত জুলাই/আগস্ট মাসের মাঝামাঝি সময়ে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মতে, প্রতিটি এলাকা রোহিঙ্গায় ভরে গেছে।
তবে এ পর্যন্ত মিয়ানমার থেকে কত রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসেছে, তা কেউ নির্দিষ্ট করে বলতে পারেননি। সম্প্রতি সেনা সদরে ব্রিফিংয়ে জানানো হয়েছে, অন্তত ৭৫০ রোহিঙ্গা নতুন করে বাংলাদেশে ঢুকেছে। কিন্তু স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও রোহিঙ্গা নেতাদের ভাষ্যমতে, রাখাইনে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত আধা লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে নতুন করে ঢুকেছে।
কুতুপালং উত্তর মসজিদ সংলগ্ন একটি কলোনিতে ভাড়া বাসায় আশ্রয় নিয়েছে অসংখ্য রোহিঙ্গা পরিবার।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পালিয়ে আসা এক রোহিঙ্গা বলেন,
‘রাখাইনে এক ভয়াবহ পরিস্থিতি যাচ্ছে। সেখানে থাকার অবস্থা নেই। খাবার নেই, থাকার ঘর নেই, অসুস্থ মানুষের চিকিৎসার ব্যবস্থা নেই। জান্তা সরকার ও আরাকান আর্মির যুদ্ধে প্রতিদিন মারা যাচ্ছে রোহিঙ্গা শিশু, নারীসহ বহু মানুষ। বিশেষ করে সীমান্তে জড়ো হওয়া লোকজনের ওপর ড্রোন হামলা হচ্ছে। এতে অনেক মানুষ মারা যাচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘মৃত্যুর ভয়ে নৌকায় নাফ নদ পেরিয়ে এপারের উখিয়া-টেকনাফের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে প্রবেশ করেছি। স্থানীয় দালাল ৫০ হাজার টাকা নিয়েছে। ক্যাম্পে থাকার জায়গা না পেয়ে ভাড়া বাসায় উঠেছি। মাসে ৪ হাজার টাকা ঘর ভাড়া দিতে হচ্ছে। বিদেশে স্বজনদের কাছ থেকে সাহায্য নিয়ে কষ্টে দিন পার করছি। কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে চলে যাওয়ার জন্য ভাবছি। আমার মতো অনেকে এখানে গ্রামগঞ্জে এবং ভাড়া বাসায় আশ্রয় নিয়েছে।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নতুন করে রাখাইন থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের একটি বড় অংশ আশ্রয় নিয়েছে কুতুপালং পশ্চিমপাড়া ভাড়া বাসায়। উক্ত পাড়ায় ভাড়াটিয়া হিসেবে অসংখ্য রোহিঙ্গা পরিবারের দেখা মিলেছে।
২০১৭ সালে আসা রোহিঙ্গা অলি আহমদ স্থানীয় মেয়ে বিয়ে করে জমি কিনে ঘরবাড়িও করছে বলে স্থানীয় রহমত আলী দাবি করেন। তিনি দ্রুত রোহিঙ্গাদের ক্যাম্পে পাঠাতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
Cox's Bazar Office: Main Road, Kolatli, Cox's Bazar, Bangladesh.
Ukhia Office: Main Road, Ukhia, Cox's Bazar, Bangladesh.
Email: shimantoshohor@gmail.com
© 2025 Shimantoshohor.com. All rights reserved.