কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের কবিতাচত্বর থেকে নাজিরারটেক পর্যন্ত বিভিন্ন পয়েন্টে প্রতিদিন নির্বিচারে আহরণ করা হচ্ছে সামুদ্রিক শামুক ও ঝিনুক। জীববৈচিত্র্যের ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ এই প্রাণীগুলোকে অবাধে উত্তোলনের কারণে হুমকির মুখে পড়ছে সমুদ্রের তলদেশের ইকোসিস্টেম। অথচ এ বিষয়ে প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের তেমন কোনো পদক্ষেপ চোখে পড়ছে না।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট কৌশলে এই আহরণ কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। দিন-রাত নির্বিশেষে সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে শামুক-ঝিনুক সংগ্রহ করে তা ডাম্পার, টমটম ও অটোরিকশায় করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বিভিন্ন স্থানে। স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রশাসনের সামনে দিয়েই এসব চলছে, কিন্তু কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।
ঢাকা থেকে আসা পর্যটক হাসান মাহমুদ রাশেদ বলেন, “কক্সবাজারের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অন্যতম উপাদান শামুক-ঝিনুক। কিন্তু অসাধু ব্যবসায়ীরা প্রতিদিন এগুলো বালিয়াড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে সৈকতের জীববৈচিত্র্য মারাত্মক ঝুঁকির মুখে পড়বে।”
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) কক্সবাজার জেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক এইচ এম নজরুল ইসলাম বলেন, “সাগরের পানি পরিষ্কার রাখা এবং বালুচর গঠনে শামুক-ঝিনুকের ভূমিকা অপরিসীম। কিন্তু নজরদারির অভাবে উপকূলীয় এলাকা থেকে ব্যাপকভাবে এগুলো আহরণ হচ্ছে। মনে রাখতে হবে, শামুক-ঝিনুক পরিবেশ রক্ষার একটি মূল উপাদান। এগুলো নিধন অব্যাহত থাকলে জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশ মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হবে। যত দ্রুত সম্ভব কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।”
এ বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজারের উপপরিচালক খন্দকার মাহমুদ পাশা জানান, “আমরা বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নই। ঘটনার সত্যতা পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সামুদ্রিক শামুক-ঝিনুককে ‘ইকোসিস্টেম ইঞ্জিনিয়ার’ বলা হয়, কারণ তারা সমুদ্রের পানি পরিশোধন করে ও তলদেশের জীববৈচিত্র্য রক্ষা করে। নির্বিচারে আহরণ চলতে থাকলে কক্সবাজার সৈকতের প্রাকৃতিক ভারসাম্য ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
Cox's Bazar Office: Main Road, Kolatli, Cox's Bazar, Bangladesh.
Ukhia Office: Main Road, Ukhia, Cox's Bazar, Bangladesh.
Email: shimantoshohor@gmail.com
© 2025 Shimantoshohor.com. All rights reserved.