বিচ্ছিন্ন দু-একটি ঘটনা ছাড়া শান্তিপূর্ণভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার পর একের পর এক অভিযোগ পাল্টা অভিযোগ তুলতে শুরু করেন বিভিন্ন প্যানেলের প্রার্থীরা।
মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, প্রায় প্রতিটি ভোটকেন্দ্রের সামনে ফলাফলের জন্য শিক্ষার্থীরা অপেক্ষা করছেন। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ ঘিরে ক্যাম্পাসজুড়ে দেখা গেছে থমথমে পরিবেশ।
এদিকে, ক্যাম্পাস এলাকায় যে কোনো ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলায় সতর্ক অবস্থানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
অভিযোগ রয়েছে, বিকেল ৪টায় ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার পরই ফলাফল ঘোষণাকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাসের বাইরে জড়ো হতে থাকেন জামায়াত-শিবির ও বিএনপিসহ অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। এ অবস্থায় ক্যাম্পাস এলাকায় অতিরিক্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়।
সন্ধ্যার পর থেকে নীলক্ষেত এলাকায় বিএনপি ও জামায়াতের দুটি গ্রুপের নেতাকর্মীদের অবস্থান নিতে দেখা গেছে। শাহবাগ মোড়েও দুই দলের নেতাকর্মীরা অবস্থান নিয়েছেন। এতে পুরো ক্যাম্পাসে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
রাতে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মাসুদ আলম জাগো নিউজকে জানান, ফলাফল ঘিরে যে কোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি মোকাবিলায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা প্রস্তুত।
তিনি বলেন, সন্ধ্যার পর থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য বাড়ানো হয়েছে। সন্দেহভাজন যানবাহনে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। কোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি যেন সৃষ্টি না হয়, সে বিষয়ে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে পুলিশসহ অন্য বাহিনীর সদস্যরা।
এর আগে বিকেলে ডাকসু নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ‘চরম ব্যর্থতার’ পরিচয় দিয়েছে বলে অভিযোগ করেন ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের ভিপি প্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘সকাল থেকে আমরা ভোটকেন্দ্রগুলোতে ঘুরেছি। যখনই কোনো কেন্দ্রে গিয়েছি, বিভিন্নভাবে আমাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হয়েছে। আমি প্রার্থী, আমাকেও কেন্দ্রে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। আচরণবিধিতে অনুমতি থাকা সত্ত্বেও বাধা দেওয়া হয়েছে। অনেক কেন্দ্রে আমাদের এতিমের মতো দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে। এতে প্রার্থীদের সময় নষ্ট করা হয়েছে।’
সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনের সামনে আয়োজিত জরুরি সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রশিবির সমর্থিত ভিপি প্রার্থী সাদেক কায়েম ভোটে ফলাফল যা-ই হোক, তা মেনে নিতে সব প্রার্থী ও ছাত্রসংগঠনের নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘ডাকসু নির্বাচনে হার-জিতের কিছু নেই। আমরা সবাই জুলাইয়ের সহযোদ্ধা ছিলাম। ঐক্যবদ্ধভাবে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনাকে বিদায় করেছি। জুলাই বিপ্লবের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন করতে হলে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা আমাদের যাকেই বেছে নেবে, তাকেই মেনে নেবো। কিন্তু শিক্ষার্থীদের ওপর যদি আমরা জোরপূর্বক কিছু চাপিয়ে দিতে চাই, তাহলে হিতে বিপরীত হবে।’
সাদিক কায়েম বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা তাদের ম্যান্ডেট যাকে দেবে, তা মেনে নিতে হবে। আমরা শিক্ষার্থীদের ম্যান্ডেট মেনে নেবো, সবাইকে মেনে নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। আশা করছি, যারা বিভিন্ন ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত করছেন, তারা চক্রান্ত থেকে বেরিয়ে আসবেন।’
Cox's Bazar Office: Main Road, Kolatli, Cox's Bazar, Bangladesh.
Ukhia Office: Main Road, Ukhia, Cox's Bazar, Bangladesh.
Email: shimantoshohor@gmail.com
© 2025 Shimantoshohor.com. All rights reserved.