কুমিল্লা নগরীর কালিয়াজুড়ি এলাকা থেকে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী ও তার মাকে হত্যার ঘটনায় আব্দুর রব (৭৩) নামের এক ব্যক্তিকে আটক করেছে র্যাব।
সোমবার (৮ সেপ্টম্বর) দুপুর ২টার দিকে জেলা নাঙ্গলকোটে অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করা হয়।
র্যাব-১১ কুমিল্লা ক্রাইম প্রিভেনশন কোম্পানি-২ এর উপপরিচালক মেজর সাদমান ইবনে আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
আটক আব্দুর রব নাঙ্গলকোট উপজেলার রায়কোট ইউনিয়নের শরীপুর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি পেশায় একজন কবিরাজ।
মেজর সাদমান ইবনে আলম জানান, কালিয়াজুড়ি এলাকায় মা-মেয়ে হত্যাকাণ্ডটি ক্লুলেস ঘটনা। গোয়েন্দা তথ্য এবং নিহত তাহমিনা বেগমের সঙ্গে সবশেষ আব্দুর রবের যোগাযোগের সূত্র ধরে দুপুর ২টার দিকে নাঙ্গলকোটে অভিযান চালিয়ে নিজ বাসা থেকে আব্দুর রবকে আটক করা হয়। তাকে কুমিল্লা কোতোয়ালি থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
এর আগে রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) দিনগত রাত ২টার দিকে ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কালিয়াজুড়ি পিটিআই মাঠ সংলগ্ন নেলী কটেজ ভবনের দ্বিতীয়তলা থেকে মরদেহ দুটি উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহতরা হলেন কুমিল্লা নগরীর সুজানগর এলাকার বাসিন্দা ও কুমিল্লা আদালতের সাবেক হিসাবরক্ষক মৃত নুরুল ইসলামের স্ত্রী তাহমিনা বেগম (৪৫) এবং তার মেয়ে সুমাইয়া আরফিন (২৩)।
সুমাইয়া কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ১৬তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। তারা গত পাঁচ বছর ধরে কালিয়াজুড়ি এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করে আসছিলেন।
এদিকে এ ঘটনার বিচার দাবি করে দুপুর ১২টা থেকে নগরীতে এবং পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ করেন কুবি শিক্ষার্থীরা। দুই ঘণ্টা পর পুলিশ সুপারের আশ্বাসে তারা কর্মসূচি শেষ করেন।
বাড়ির মালিক আনিসুল ইসলাম রানা জানান, প্রায় চার বছর আগে কুমিল্লা আদালতের কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম বাড়িটি ভাড়া নেন। গত বছর তার মৃত্যুর পর স্ত্রী তাহমিনা আক্তার, মেয়ে সুমাইয়া এবং দুই ছেলে নিয়ে বাড়িটিতে অবস্থান করছেন।
তারা কারও সঙ্গে তেমন কথা বলতেন না। রোববার রাত ১১টার দিকে তার দুই ছেলে ফয়সাল ও আল-আমীন ঢাকা থেকে বাসায় ফিরে ঘরের দরজা খোলা দেখতে পান। ঘরে প্রবেশ করে দেখেন মা ও বোন ঘুমিয়ে আছেন। দীর্ঘ সময় পরও সাড়াশব্দ না পেলে জাগাতে গিয়ে দেখেন তারা নড়ছেন না। পরে ৯৯৯ নম্বরে কল করলে পুলিশ এসে মরদেহ দুটি উদ্ধার করে নিয়ে যায়।
এ বিষয়ে কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহিনুল ইসলাম জানান, মরদেহ উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। প্রাথমিকভাবে তাদের শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, এটি হত্যাকাণ্ড। শ্বাসরোধে তাদের হত্যা করা হতে পারে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে বিষয়টি পরিষ্কারভাবে বলা যাবে।
এ ঘটনায় নিহতের ছেলে বাদী হয়ে থানায় মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।