কক্সবাজার শহরের কস্তুরাঘাটে বাঁকখালী নদীর তীরে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযানের দ্বিতীয় দিনে দখলদারদের হামলায় পুলিশের এক সদস্য আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। হামলার পরপরই পুলিশ চারজনকে আটক করে। তাদের নাম জানা যায়নি।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) সোমবার সকাল থেকে নদী উদ্ধারে উচ্ছেদ অভিযান শুরু করে। প্রথম দিনেই উচ্ছেদ হওয়া স্থাপনার মালামাল ও ভরাট করা মাটি প্রকাশ্যে নিলামে ৬ লাখ টাকায় বিক্রি হয়। মঙ্গলবারও সকাল ১০টার পর কক্সবাজার সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) শারমিন সুলতানার নেতৃত্বে কস্তুরাঘাট এলাকায় দ্বিতীয় দিনের মতো উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়। অভিযানের শুরুতে দখলদারদের বাধায় সংঘর্ষের পরিস্থিতি তৈরি হয়।
কক্সবাজার সদর থানার ওসি ইলিয়াস খান জানান, অভিযানের সময় দখলদাররা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে কনস্টেবল করিম আহত হন। তাকে উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে তিনজনকে আটক করা হয়েছে। তিনি বলেন, “বিআইডব্লিউটিএর কর্মীদের সহায়তায় পুলিশ, র্যাব ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা অভিযানে অংশ নেন। হামলার পর কঠোর অবস্থান নিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয় এবং উচ্ছেদ কার্যক্রম অব্যাহত থাকে।”
বিআইডব্লিউটিএ কক্সবাজার কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. খায়রুজ্জামান জানান, দুই দিনে তিন একরের বেশি জায়গা দখলমুক্ত করা হয়েছে। মঙ্গলবারের উচ্ছেদ শেষে মালামাল আবারও নিলাম হবে।
সূত্র জানায়, ৮১ কিলোমিটার দীর্ঘ বাঁকখালী নদী বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি থেকে উৎপত্তি হয়ে রামু ও কক্সবাজার সদর হয়ে বঙ্গোপসাগরে মিশেছে। এর মধ্যে নুনিয়ারছড়া থেকে মাঝিরঘাট পর্যন্ত প্রায় ছয় কিলোমিটার এলাকায় সবচেয়ে বেশি দখল হয়েছে। গত এক দশকে গড়ে উঠেছে সহস্রাধিক অবৈধ স্থাপনা। ২০১০ সালে সরকার বিআইডব্লিউটিএকে বাঁকখালী নদীবন্দরের সংরক্ষক নিয়োগ দিলেও জমি বুঝিয়ে না দেওয়ায় দখল অব্যাহত ছিল। ২০২৩ সালে যৌথ অভিযানে ছয় শতাধিক স্থাপনা উচ্ছেদ করা হলেও পরে ফের দুই শতাধিক স্থাপনা নির্মাণ হয়।
সম্প্রতি হাইকোর্ট নদীর সীমানা নির্ধারণ করে আগামী চার মাসের মধ্যে সব দখলদার উচ্ছেদ ও দূষণ নিয়ন্ত্রণের নির্দেশ দেয়। সেই নির্দেশ বাস্তবায়নেই সোমবার থেকে এ অভিযান শুরু হয়েছে। কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) নিজাম উদ্দিন আহমেদ বলেন, “অবৈধ সব স্থাপনা উচ্ছেদ শেষে নদীর সীমানা নির্ধারণ করা হবে।”
Cox's Bazar Office: Main Road, Kolatli, Cox's Bazar, Bangladesh.
Ukhia Office: Main Road, Ukhia, Cox's Bazar, Bangladesh.
Email: shimantoshohor@gmail.com
© 2025 Shimantoshohor.com. All rights reserved.