অন্ধকার পাহাড়ি কক্ষ, শিকলবদ্ধ ভয় আর মুক্তিপণের চাপ—এভাবেই কাটছিল দিনগুলো। নারী-শিশুসহ ৩৮ জন মানুষ বন্দি ছিলেন পাচারকারীদের আস্তানায়। অবশেষে কোস্ট গার্ড ও নৌবাহিনীর যৌথ অভিযানে ভোররাতের অন্ধকার ভেদ করে তারা ফিরে পান মুক্তির স্বাদ।
শুক্রবার (৩ অক্টোবর) দুপুরে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সিয়াম-উল-হক সংবাদমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ২টার দিকে বাহারছড়া ইউনিয়নের কচ্ছপিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশের পাহাড়ি এলাকায় অভিযান চালানো হয়। এসময় ১৮ নারী, ১২ পুরুষ ও ৮ শিশুকে উদ্ধার করা হয়। আটক করা হয় দুই মানবপাচারকারীকে।
উদ্ধার হওয়া এক নারী ভাঙা গলায় বলেন, “আমাদের পরিবারকে ফোন করে টাকা চাইত। টাকা না দিলে নির্যাতন করত। খেতে দিত খুব সামান্য। বাচ্চাদের কাঁদতে কাঁদতে ঘুমিয়ে পড়তে হতো।”
অন্যদিকে এক তরুণ জানান, “মালয়েশিয়া নিয়ে যাবে বলে আমাদের এখানে আটকে রাখে। আমরা জানতাম না সামনে কী হবে। শুধু ভয় আর অন্ধকার।”
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পাচারকারীরা দীর্ঘদিন ধরে পাহাড়ি গহ্বর ব্যবহার করে মানুষকে আটকে রাখে এবং সাগরপথে বিদেশে পাঠানোর চেষ্টা করে। মুক্তিপণের জন্য তাদের ওপর চলে অমানবিক নির্যাতন।
কোস্ট গার্ড কর্মকর্তা সিয়াম-উল-হক বলেন, “এরা মুক্তিপণের জন্য অসহায় মানুষকে জিম্মি করে রেখেছিল। অভিযান চালিয়ে নারী-শিশুসহ ৩৮ জনকে উদ্ধার করতে পেরেছি। আটক দুই পাচারকারীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।”
মানবপাচারের ভয়াল ছোবল থেকে মুক্তি পাওয়া ভুক্তভোগীদের চোখে এখনো আতঙ্কের ছাপ। তবে জীবনের ঝুঁকি থেকে মুক্ত হয়ে তারা যেন আবারও আলোয় ফিরতে পারছেন—এটাই সবচেয়ে বড় স্বস্তি।
Cox's Bazar Office: Main Road, Kolatli, Cox's Bazar, Bangladesh.
Ukhia Office: Main Road, Ukhia, Cox's Bazar, Bangladesh.
Email: shimantoshohor@gmail.com
© 2025 Shimantoshohor.com. All rights reserved.