কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে সাগর পথে মানব পাচারকারী চক্রের ৫ সদস্যকে আটক করেছে বিজিবি। এ মামলায় আরও ৪ জনকে পলাতক আসামি করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেন টেকনাফ ব্যাটালিয়ন (২ বিজিবি) অধিনায়ক লে. কর্নেল আশিকুর রহমান। তিনি জানান, বেশ কিছুদিন যাবৎ গভীর সাগর দিয়ে মেরিন ড্রাইভ ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকায় কয়েকটি সঙ্ঘবদ্ধ চক্র মাদক এবং মানব পাচারসহ চোরাচালান করতে তৎপর রয়েছে।
এ সকল মানব পাচারে সক্রিয় চক্রের দৌরাত্ম বেড়ে যাওয়ায় স্থানীয়দের মাঝে ভীতির সঞ্চার হয়।
জনমনে স্বস্তি ফিরিয়ে আনতে পরিচালিত চলমান বিশেষ অভিযানে বড় ধরনের সাফল্য পেয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
দীর্ঘদিনের গোয়েন্দা নজরদারি ও গোপন তথ্যের ভিত্তিতে একটি পাচারকারী চক্রের পাঁচ জন সদস্যকে সীমান্তে আটকসহ মায়ানমার হতে বিপুল সংখ্যক মানব পাচারের একটি প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে দেয়া হয়েছে।
টেকনাফ ব্যাটালিয়ন (২ বিজিবি) সীমান্ত এলাকায় মানব পাচার প্রতিরোধের লক্ষ্য নিয়ে একটি বিশেষ আভিযানিক দল গঠন করে গত কয়েক মাস ধরে নাফ নদী এবং তৎসংলগ্ন সীমান্তে কঠোর অবস্থান নেয়।
অপহরণ এবং মানব পাচার প্রতিরোধে ২ বিজিবি বেশ কিছু অভিযান পরিচালনা করলে আটক আসামিদের দেয়া তথ্য এবং ব্যাটেলিয়ানের নিজস্ব গোয়েন্দাদের অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে বেশ কিছু দিন যাবত কয়েকটি সংঘবদ্ধ চক্র স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তির ছত্রছায়ায় মায়ানমার হতে বাংলাদেশে মানব ও মাদক পাচার এবং বাংলাদেশ হতে মায়ানমার হয়ে মালয়েশিয়া পর্যন্ত মানব পাচারের মতো জঘন্য অপরাধের সাথে জড়িত।
গভীর রাতে সুনির্দিষ্ট গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে তাঁর নেতৃত্বে টেকনাফ ব্যাটালিয়ন একটি বিশেষ অভিযান সফলভাবে পরিচালনা করে। ১১ সেপ্টেম্বর গভীর রাত পর্যন্ত চলা এই অভিযানে একটি সংগঠিত পাচারকারী দলের পাঁচ সদস্যকে হাতেনাতে আটক করা সম্ভব হয়। আটককৃতরা হলেন এখলাছ মিয়ার পুত্র সৈয়দ আলম (২৯), ইয়াহিয়ার পুত্র মো. আব্দুল্লাহ (২২), ইউনুস আলীর পুত্র মো. রিদুয়ান হোসেন (২০), কেফায়েত উল্লাহর পুত্র মো. নুরুল আফসার (২০), মৃত দিল মোহাম্মদের পুত্র মো. আবদুল হাকিম (৪০)।
সকলেই টেকনাফ সদর ইউনিয়নের দক্ষিণ লম্বরী গ্রামের বাসিন্দা।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাদের কাছ থেকে পাচারের সাথে জড়িত কয়েকটি চক্রের কাঠামো, সদস্য এবং কার্যক্রমের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেলে বিজিবি টেকনাফের আশেপাশে বেশ কিছু এলাকায় সাঁড়াশি অভিযান করলেও চক্রের অন্য কোন সদস্যকে এখন পর্যন্ত গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। তবে মামলায় আরও ৪ জনকে পলাতক আসামী করা হয়েছে।
এরা হলেন দক্ষিণ লম্বরী হাফিজুর রহমানের পুত্র সাইফুল (৪০), তুলাতলী জহির আহমদের পুত্র মোস্তাফা প্রকাশ গোরাইয়া (২০), দক্ষিণ লম্বরী মৃত ইউনুসের পুত্র নুর আলম (৩০), দক্ষিণ লেঙ্গুরবিল আমির হামজা সওদাগরের পুত্র সামসু (৪৫)। সকলেই টেকনাফ সদর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা।
গ্রেপ্তারকৃত ৫ জন আসামীকে প্রচলিত আইন অনুসারে স্থানীয় থানায় মামলা রুজুসহ হস্তান্তর করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, চলতি বছরে অদ্যাবধি পরিচালিত বিশেষ অভিযানগুলোতে সঙ্গবদ্ধ মানব পাচারকারী চক্রগুলোর ৪৭ জনকে আটক করা হয়েছে এবং ২১ জন আসামি এখনও পলাতক রয়েছে।
চক্রের মূলহোতা এবং বাকি সদস্যদের ধরতে জোরদার অভিযান পরিচালনার পরিকল্পনা ও প্রস্ততি নিচ্ছে টেকনাফ ব্যাটালিয়ন।
Cox's Bazar Office: Main Road, Kolatli, Cox's Bazar, Bangladesh.
Ukhia Office: Main Road, Ukhia, Cox's Bazar, Bangladesh.
Email: shimantoshohor@gmail.com
© 2025 Shimantoshohor.com. All rights reserved.