গ্রেফতারের পর প্রভাবশালীদের ইশারায় ডিবি থেকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে ফ্যাসিস্ট ঢাবি ছাত্রলীগ সহ-সভাপতি মিরাজ ইরফানকে। গত ১৩ সেপ্টেম্বর ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের রমনা বিভাগের ডিসির টিম ইরফানকে রাজধানী থেকে গ্রেফতার করে। পরে ডিবি প্রধানের নির্দেশে ইরফানকে তার মামা সাজেদ বিন আমিন চৌধুরীর জিম্মায় ছেড়ে দেয়া হয়েছে। ফ্যাসিস্ট ছাত্রলীগ নেতাকে ছেড়ে দেয়ার ঘটনায় পুলিশের মধ্যে তোলপাড় চলছে। একই সাথে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে ডিবির পুলিশ কর্মকর্তাদের মধ্যে। এ ব্যাপারে ডিবির প্রধান শফিকুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে এ বিষয়ে ডিএমপির মুখ্যপাত্র (মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস্ বিভাগ) ডিসি মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বলেন, এ রকম কোনো তথ্য আমার জানা নেই।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ডিবির একাধিক কর্মকর্তা বলেন, দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে ডিবি ছিল দেশের সাধারন মানুষের আতংকের নাম। এক পর্যায়ে ডিবি প্রধান হিসেবে ডিআইজি হারুন আর রশীদ ডিবিকে সাধারন মানুষের কাছে এক আতংকের নাম হিসেবে তৈরি করে। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের সময় এই হারুন গংরা বিএনপি-জামায়াতসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার, নির্যাতন এবং টাকা আদায়ের হেডকোয়াটারে পরিনত করে। শুধু তাই নয়, এখানে বসেই সাজানো হতো জঙ্গী নাটক। ফ্যাসিস্টদের সময় জমি দখল-বেদখল থেকে শুরু করে আয়না ঘরও ছিল এই ডিবি অফিস। আওয়ামী সরকার বিরোধী আন্দোলনের সময় সমন্বয়কদের ধরে এনে আটকে রেখে নির্যাতন করাসহ নানা নাটক করা হয়েছে এই ডিবিতে।
ওই কর্মকর্তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এখনও যদি ফ্যাসিস্টদের মত্যে ডিবিতে গ্রেফতার বাণিজ্য আর গ্রেফতারের পর ছাত্রলীগ নেতাদের ছেড়ে দেয়ার ঘটনা ঘটে তা হলে জাতির জন্য এর চেয়ে লজ্জার আর কিছুই নেই। ওই কর্মকর্তারা তদন্ত করে এ ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির দাবি করেছেন।
গত ১৩ সেপ্টেম্বর স্বাক্ষরিত জিম্মা নামায় উল্লেখ করা হয়, আমি মোহাম্মদ সাজেদ বিন আমিন চৌধুরী, পিতা- এটিএম নুরুল আমিন চৌধুরী, মাতা নূরজাহান আমিন চৌধুরী, গ্রাম-মোবারক খিল, ডাকঘর পাইরা, থানা রাউজান,জেলা-চট্টগ্রাম। বর্তমান ঠিকানা, আমিন হাউজ, রোড-৩, উত্তরা আবাসিক এলাকা, চট্ট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, থানা হাটহাজারী, জেলা চট্টগ্রাম। এই মর্মে নিজ জিম্মায় গ্রহন পূর্বক জানাইতেছি যে, আমি সম্পর্কে মিরাজ ইরফান চৌধুরী (সহ-সভাপতি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়), পিতা সরোয়ার কামাল চৌধুরী, মাতা মোছাম্মৎ জোহেদা আমিন, সাং, শেতকুয়া, ডাক-বৃন্দাবন হাট, থানা ফটিকছড়ি, জেলা চট্টগ্রাম এর মামা হই। আমি আমার ভাগিনাকে তার সাথে থাকা মোবাইল এবং মানিব্যাগসহ সম্পূর্ণ সুস্থ অবস্থায় ডিবি অফিস হইতে নিজ জিম্মায় বুঝিয়া নিলাম। ডিবি পুলিশ বলা মাত্র তাকে হাজির করতে বাধ্য থাকিব। অন্যথায় আইন আমলে আসিব।