মৌলভীবাজারের বড়লেখায় বহুল আলোচিত জুলাই হত্যাকান্ডের ১১ মামলার আসামি, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সন্ত্রাসী ও চিহ্নিত মাদক ও হুন্ডি কারবারী সাইদুল ইসলামকে এবার দলে জায়গা করে দিলো জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ।
উল্ল্যেখ্য আওয়ামী ঘনিষ্ঠ ও অভিযুক্ত সন্ত্রাসী সাইদুল ইসলাম, অতি সম্প্রতি জুলাই হত্যাকান্ডের মামলা থেকে জামিনে মুক্তি পেয়ে, গতকাল ৪ অক্টোবর শনিবার নিজ বাসভবন, বড়লেখার গাজীটেকা আইলাপুর গ্রামে “শুকরানা সমাবেশের” মাধ্যমে জেলা নেতৃবৃন্দের সম্মুখে, সদস্য ফরম পূরণ করার মাধ্যমে জামায়াতে যোগদান করেন।
অভিযোগ আছে, আওয়ামী ফ্যাসিস্ট আমলের কু-খ্যাত পুলিশ কর্মকর্তা ও সাবেক আইজিপি বেনিজির আহমেদ সহ সাবেক আওয়ামী বন ও পরিবেশ মন্ত্রী শাহাব উদ্দিনের অত্যান্ত ঘনিষ্ঠ সহচর ছিলেন তিনি। এছাড়াও আওয়ামী সময়ে নানাবিধ অবৈধ সুযোগ সুবিধা, নিয়োগ ও তদবীর বানিজ্যের সঙ্গেও অতপ্রত ভাবে তার নাম জড়িয়ে যায়। তবে স্থানীয় ভাবে তিনি স্বর্ণ, ইয়াবা এবং হুন্ডির একজন উল্ল্যেখযোগ্য কারবারি নামে পরিচিত।
বিশেষ করে ৫ই আগষ্টের গণ-অভ্যুথানের পর তার গ্রেফতারের জন্য বিক্ষোভ মিছিল এবং গ্রেফতার পরবর্তী সময়ে আনন্দমিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছিলো। এর কারণ অনুসন্ধান করে জানা যায়, স্থানীয় আধিপত্য এবং মাদক কারবারের মাধ্যমে বড়লেখার যুব সমাজকে ধ্বংসের কারিগর সাইদুল ইসলাম নিজস্ব বাহিনী গড়ে তুলেছিলেন হুন্ডি মাদক এবং স্বর্ণ চোরাচালানের জন্য। দরিদ্র ও অভাবী ঘরের সন্তানদেরকে আর্থির প্রণোদনা দেয়ার মাধ্যমে দানবীর খ্যাতির আড়ালে তাদের দিয়েই করানো হতো অবৈধ সব কারবার।
উল্ল্যেখ্য ইতিপূর্বে ২০২০ সালের ৮ই জুলাই জেলার পলিথিন ব্যবসার সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্রকরে সংঘর্ষ জড়ান তিনি। সংঘর্ষের একপর্যায়ে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার ও দলীয় ক্যাডারদের ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দেয়ার জন্য তার বিরুদ্ধে ২টি ফৌজদারী মামলা দায়ের হয়েছিলে। যেখানে মামলার মুল আসামী এবং সংঘর্ষের মুল পরিকল্পনাকরী হিসেবে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
শূন্য থেকে শত কোটি টাকার মালিক বনে যাওয়া সাইদুল ইসলাম মুলত আওয়ামী নেতৃবৃন্দের জন্য হুন্ডি এবং স্বর্ণ চোরাচালানের মাধ্যমে দ্রুত সম্পদের মালিক বণে গিয়েছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় অধিবাসীরা। তবে তার বিরুদ্ধে দুদকের তদন্ত চলমান বলেও গোপন সূত্রে জানা গিয়েছে।
তার বিরুদ্ধে থাকা সমুহ অভিযোগ এবং জামায়াতে যোগদানের মুল কারণ জানতে চাইলে তিনি জানান, শুরু থেকেই তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার এবং ষড়যন্ত্র চলছে। তিনি যা কিছু অর্জন করেছেন তার সবটুকুই ব্যবসা বানিজ্যের মাধ্যমে। এবং স্থানীয় ভাবে তিনি প্রচুর সাহায্য সহযোগীতা করেন বিধায় স্বার্থন্বেষী একটি মহল দীর্ঘদিন যাবত তার পেছনে লেগে আছে। ফলে আণিত সকল অভিযোগ ভিত্তিহীন এবং বানোয়াট বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এছাড়াও জামায়াতে যোগদানের ব্যাপারে তিনি বলেন, দীর্ঘ ২০ বছর যাবত তিনি জামায়াতের রাজনীতি পর্যবেক্ষণ করে আসছেন। তাদের নেতৃত্ব এবং লক্ষ্য উদ্দেশ্যের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা থেকেই মুলত তিনি জামায়াতের রাজনীতিতে অংশ নিয়েছেন। এবং প্রত্যাশা করছেন যে, জামায়াত তাকে সিলেটের বড়লেখা থেকে মনোনয়ন প্রদান করবে।
এমন একজন বিতর্কিত ও চিহ্নিত জুলাই হত্যাকান্ডের আসামীকে দলে অন্তর্ভূক্ত কিভাবে করা হলো প্রশ্নের উত্তরে জামায়াতের জনৈক কেন্দ্রীয় দ্বয়িত্বশীল বলেন, যে কেউ চাইলেই সদস্য ফরম পূরন করতে পারে। তবে জামায়াত সুক্ষ্ম যাচাই বাছাই করেই সদস্য নির্বাচন করে থাকে। বিতর্কিত কেউ ফরম পুরন করলেই সদস্য হয়ে যাবার কোন সম্ভাবনা নেই। তবে বিষয়টি নিয়ে বিভাগীয় দ্বায়িত্বশীলদের সঙ্গে আরো বিস্তারিত আলাপ করবেন বলেও জানান তিনি।
Cox's Bazar Office: Main Road, Kolatli, Cox's Bazar, Bangladesh.
Ukhia Office: Main Road, Ukhia, Cox's Bazar, Bangladesh.
Email: shimantoshohor@gmail.com
© 2025 Shimantoshohor.com. All rights reserved.