পাকিস্তানের নৌ-শক্তি বাড়াতে ঘনিষ্ঠ মিত্র চীন নতুন এক উন্নত সাবমেরিন হস্তান্তর করেছে। আটটি হাঙ্গর-শ্রেণির সাবমেরিনের মধ্যে তৃতীয়টি বৃহস্পতিবার চীনের হুবেই প্রদেশের উহানে আনুষ্ঠানিকভাবে পাকিস্তান নৌবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয়। চলতি বছরের মার্চে দ্বিতীয় সাবমেরিন সরবরাহ করেছিল বেইজিং।
রোববার (১৭ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে ইন্ডিয়া ডট কম। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এটি পাকিস্তানের জন্য একটি বড় কৌশলগত অর্জন বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ আধুনিক অস্ত্র ও উন্নত সেন্সরযুক্ত এসব সাবমেরিন ভারত মহাসাগরে শক্তির ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে পাকিস্তান নৌবাহিনী আশা করছে। পাকিস্তানের ডেপুটি চিফ অব নেভাল স্টাফ (প্রজেক্ট–২) ভাইস অ্যাডমিরাল আবদুল সামাদ বলেছেন, ‘হাঙ্গর-শ্রেণির সাবমেরিনের অত্যাধুনিক অস্ত্র ও সেন্সর আঞ্চলিক শক্তির ভারসাম্য টিকিয়ে রাখতে সহায়ক হবে এবং সামুদ্রিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করবে।’
চীনের রাষ্ট্রীয় দৈনিক গ্লোবাল টাইমস জানিয়েছে, এ সাবমেরিনের বৈশিষ্ট্যের মধ্যে রয়েছে শক্তিশালী পানির নিচে যুদ্ধক্ষমতা, সর্বাঙ্গীণ সেন্সর সিস্টেম, উৎকৃষ্ট স্টেলথ প্রযুক্তি, উচ্চ গতিশীলতা, দীর্ঘ সময় টিকে থাকার ক্ষমতা এবং ভয়ংকর অগ্নিশক্তি।
সংবাদ প্রতিবেদন অনুযায়ী, এসব সাবমেরিনে এয়ার–ইন্ডিপেন্ডেন্ট প্রপালশন (এআইপি) প্রযুক্তি যুক্ত থাকতে পারে। তবে পাকিস্তান আনুষ্ঠানিকভাবে এ তথ্য নিশ্চিত করেনি। উল্লেখ্য, ভারতের নৌবাহিনীর হাতে এ মুহূর্তে এআইপি প্রযুক্তিসম্পন্ন সাবমেরিন নেই। যদিও দেশটির হাতে দুটি পারমাণবিকচালিত সাবমেরিন রয়েছে। ভারতের প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থা (ডিআরডিও) নিজস্ব এআইপি প্রযুক্তি তৈরি করেছে, যা ভবিষ্যতে কালভারি-শ্রেণির সাবমেরিনে স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে।
চীনের সহায়তায় পাকিস্তান এর আগে চারটি আধুনিক যুদ্ধজাহাজও সংগ্রহ করেছে। এর পাশাপাশি দেশটির নৌবাহিনী শক্তিশালী করতে বেলুচিস্তানের গওয়াদর বন্দর ও ভারত মহাসাগরে বেইজিংয়ের উপস্থিতি দ্রুত বাড়ছে।
স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (সিপ্রি) এক সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের সামরিক সরঞ্জামের ৮১ শতাংশই চীন থেকে সরবরাহ করা হয়েছে। গত কয়েক বছরে পাকিস্তান চীনের কাছ থেকে রিজওয়ান নামের প্রথম স্পাইশিপ, ৬০০–এর বেশি ভিটি-৪ ব্যাটল ট্যাঙ্ক, এবং ৩৬টি জে-১০সিই ৪.৫ প্রজন্মের যুদ্ধবিমান অর্ডার করেছে। ২০২২ সালে চীন প্রথম জে-১০সিই বহুমুখী যুদ্ধবিমান পাকিস্তানকে সরবরাহ করে। এর আগে দুই দেশ যৌথভাবে জেএফ-১৭ যুদ্ধবিমান তৈরি করেছিল, যা ভারতবিরোধী সাম্প্রতিক সংঘাতে পাকিস্তান ব্যবহার করেছে বলে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।
ভারতীয় প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের মতে, পাকিস্তানের হাতে চীনা সাবমেরিন সরবরাহ হওয়া ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে নয়াদিল্লির জন্য একটি বড় কৌশলগত উদ্বেগ তৈরি করতে পারে।
Cox's Bazar Office: Main Road, Kolatli, Cox's Bazar, Bangladesh.
Ukhia Office: Main Road, Ukhia, Cox's Bazar, Bangladesh.
Email: shimantoshohor@gmail.com
© 2025 Shimantoshohor.com. All rights reserved.