নির্বাচন কমিশন প্রকাশিত সংসদীয় আসনের সীমানার চুড়ান্ত তালিকা নিয়ে আইন অনুযায়ী কোনো আদালত বা কর্তৃপক্ষের কাছে ‘প্রশ্ন তোলার’ কোনো সুযোগ নেই জানিয়ে নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেছেন, বিক্ষোভ-আন্দোলন করেও কোনো ‘লাভ হবে না’।
রোববার আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
বৃহস্পতিবার ৩০০ আসনের চুড়ান্ত সীমানার তালিকা প্রকাশ করে ইসি। এতে প্রায় ৫২টি আসনে কম-বেশি পরিবর্তন আনা হয়। এবার গাজীপুর একটি আসন বাড়িয়ে বাগেরহাটে একটি কমানো হয়েছে। এ সীমানায় ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন হবে।
আসন সীমানা নিয়ে গাজীপুরে আনন্দ মিছিল হলেও বিক্ষোভ-আন্দোলন চলছে বিভিন্ন নির্বাচনি এলাকায়।
এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেন, সীমানা নির্ধারণের কাজটি কমিশন নিরপেক্ষভাবে কাজটি শেষ করেছে। প্রশাসনিক অখণ্ডতা, ভৌগলিক এলাকা, সর্বশেষ আদম শুমারির কথা আইনে বলা হয়েছে।
“আদম শুমারির প্রতিবেদন পরীক্ষা করে দেখেছি৷ কিছুটা অসামঞ্জস্য রয়েছে বিতর্ক রয়েছে। গত ১৬ জুনের হালনাগাদ ভোটার সংখ্যার ওপর ৬৪ জেলার ভোটার সংখ্যা, গড় সংখ্যা, মোট সংখ্যা পরীক্ষা করে ঠিক করা হয়েছে যে কোথায় খু্ব বেশি, কোথায় খু্ব কম।
“সেটা বিবেচনায় নিয়ে খসড়াটা করি। সেই খসড়ার ওপর দাবি-আপত্তি এলে, শুনানি করে বিষয়টি চূড়ান্ত করা হয়েছে।”
তিনি বলেন, “আদম শুমারির যাতে ফাঁক না থাকে, সেজন্য ভোটার সংখ্যাকেও বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। ৪৬-৫০টি আসনে পরিবর্তন হতে পারে।
এক প্রশ্নের জবাবে এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, “সীমানা নিয়ে আন্দোলন কারা করছে, কেন করছে, তারা কী বলতে চাচ্ছে, আমরা সেটা এখনো জানি না। কেননা, আঞ্চলিকতা, রাজনৈতিক বিষয়, স্থানীয় বিষয় থাকে।
“কমিশন সর্বোচ্চ সতর্কতা নিরপেক্ষতা এবং যৌক্তিক দাবি-আপত্তি বিবেচনায় নিয়ে সীমানা নির্ধারণ করেছে। সীমানার চূড়ান্ত তালিকা নিয়ে কোনো আদালতে কোনো অভিযোগ দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।”
সীমানা নির্ধারণে কোন বিষয়টি অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে? জবাবে তিনি বলেন, কোথাও প্রশাসনিক বিষয় একমাত্র নিলে, একধরনের সমস্য হয়৷ আবার ভৌগলিক এলাকা বাদ দিলে একরকম সমস্যা হয়৷ কাজেই সবকিছুই বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে।
গাজীপুরে বাড়লে বাগেরহাটে কমল কেন, জানতে চাইলে আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ভোটার সংখ্যার ভিত্তিতে সবচেয়ে বেশি ছিল গাজীপুরে, কম বাগেরহাটে। ৪ লাখ ২০ হাজার ছিল গড়। এটাও ধরলে বাগেরহাটে কমই থাকে৷ ক্ষেত্র বিশেষে ভোটার সংখ্যা আমলে নেওয়া হয়েছে।
“আমরা বিব্রত নই। শতভাগ ত্রুটিমুক্ত করার চেষ্ট করেছি।”
কোথাও আনন্দ কোথাও বিক্ষোভ চলছে, এ বিষয়ে কী বলবেন? জবাবে তিনি বলেন, “আইনের ভাষায় কোনো লাভ আছে বলে মনে হয় না।”
‘ভোটের পরিবেশ শতভাগ অনুকূলে’
গেল ৫ অগাস্ট অন্তর্বর্তী প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছেন। নির্বাচন কমিশনকেও প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে সংঘাত, মাজার. দরবার শরিফে ‘মব’ হামলার পরিপ্রেক্ষিতে সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা শারমিন এস মুরশিদ নির্বাচনের আগে অতিরিক্ত সহিংসতা হলে তা ‘ভণ্ডুল’ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কার কথা বলেছেন।
শনিবার নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেছেন, “সবাই মিলে যদি আমরা নির্বাচনের মাঠটা শান্তিপূর্ণ করি, তাহলে আমাদের কাজটা করা সহজ হবে। আমি বহুবছর ধরে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করেছি, তাই কথাগুলো বললাম।”
তবে নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম বলেছেন, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে দেশে এখন পর্যন্ত ভোটের পরিবেশ শতভাগ অনুকূলে রয়েছে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে তিনি বলেন, “কোনো অনিশ্চয়তা নেই। নির্বাচন নিয়ে কমিশনের কাছে প্রতিকূল পরিস্থিতির তথ্য আসেনি।”
রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের প্রসঙ্গ ধরে তিনি, প্রায় সব প্রতিবেদন কমিশনের হাতে এসেছে। এক সপ্তাহের মধ্যে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হতে পারে।
“তবে নিবন্ধন প্রক্রিয়ার শেষ ধাপে দলগুলোর নাম নিয়ে আপত্তি জানাতে সুযোগ রাখা হবে। এ মাসের মধ্যে চূড়ান্ত হবে।”
সংবিধান ও বিদ্যমান আইন নিয়ে বিভ্রান্তির বিষয়ে আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, “প্রস্তাবিত আরপিও সংশোধনের প্রস্তাব আইন মন্ত্রণালয়ের ভেটিংয়ের পরই চূড়ান্ত হবে। অন্য কোনো আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক কিছু থাকলে তা সমন্বয় করা হবে।”
Cox's Bazar Office: Main Road, Kolatli, Cox's Bazar, Bangladesh.
Ukhia Office: Main Road, Ukhia, Cox's Bazar, Bangladesh.
Email: shimantoshohor@gmail.com
© 2025 Shimantoshohor.com. All rights reserved.