বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির ড. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেছেন, যারা নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ার বিরোধী, যারা রাতের ইলেকশনের পক্ষে, তারাই নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র করছে। আমরা যারা পিআর আর সংস্কার চাই, তারা আবার ঐক্যবদ্ধভাবে এই দাবি পূরণে সরকারকে বাধ্য করবো।
তিনি বলেন, যারা সংস্কারের বিপক্ষে, তারা নির্বাচনের বিপক্ষে। যারা সংস্কারের বিপক্ষে, তারা যেনতেন নির্বাচনের পক্ষে। আপনারা ভাবছেন হাসিনার মতো রাতে ভোট করবেন। এটা হবে না। জনগণ এটা হতে দেবে না। জনগণ এখনো মরে নাই।
রোববার (১৭ আগস্ট) রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে ‘জুলাই ঘোষণা এবং জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি প্রদান ও আমাদের করণীয়’ শীর্ষক জাতীয় সেমিনারে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জনগনের জীবনে রক্ত দেওয়া শেষ হচ্ছে না উল্লখ করে তিনি বলেন, আমাদের জুলাই বিপ্লবের পর, জনগণের আন্দোলনের ফসল হিসেবে যাদের ওপর এ জাতি আস্থা রেখে ক্ষমতায় বসিয়েছিল, আমরা ভেবেছিলাম তারা কমপক্ষে নতুন যাত্রা শুরু করতে পারবে। ক্ষমতায় বসার পর তারা এখন রাবণে পরিণত হয়েছে। এটা কি তাদের দুর্ভাগ্য নাকি বাংলাদেশের মানুষের দুর্ভাগ্য? এটা বিশ্লেষণের প্রয়োজন। তবে এটা জাতির জন্য বেদনার। আমাদের জীবন দেওয়া, রক্ত দেওয়া শেষ হচ্ছে না। আমাদের বিপ্লবের পর থেকে আবার সংগ্রামের স্লোগান দিতে হয়, রক্ত দেওয়ার ডাক দিতে হয়।
প্রধান উপদেষ্টাকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আপনি (প্রধান উপদেষ্টা) বলেছেন, সংস্কার, দৃশ্যমান বিচার এর পরে নির্বাচন। আমরা আপনার কথায় আছি। সংস্কার এর জন্য আপনি ঐকমত্য কমিশন ঠিক করে দিয়েছেন,আমরা বসেছি বারবার, ঐকমত্যে পৌঁছেছি। এখন এটা বাস্তবায়ন করা আপনার দায়িত্ব। কিন্তু আপনি বাস্তবায়ন না করে নির্বাচনের সময় ঘোষণা করে দিয়েছেন। এটা ভালো! তারিখের ব্যাপারে আমরা দ্বিমত পোষণ করছি না। আমরা বলি এই সময়টাকে এগিয়ে ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫ এ করেন। জামায়াতে ইসলামী চায় এই সময়ে নির্বাচন করুক। ডিসেম্বর, জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন নিয়ে জামায়াতের কোনো অসুবিধা নেই। এপ্রিলে দিলেও কোনো অসুবিধা ছিল না। আমরা সবসময় নির্বাচনের জন্ত প্রস্তত।
এই প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, আপনি বলেছেন সংস্কারের পর নির্বাচন, তাহলে এখন সংস্কার নিয়ে টালবাহানা কেন? আমরা কি ৩০ দিন চড়ুইভাতি খেলতে গেয়েছিলাম, এটা কি খেলা ছিল? আপনি যদি খেলা মনে করে আমাদের এঙ্গেইজ করেন, তাহলে আপনি ঠিক করেন নাই। যে ব্যাপারে ঐকমত্য হয়েছে, তা আপনাকে বাস্তবায়ন করতে হবে নির্বাচনের পূর্বেই।
পিআর নিয়ে গণভোটের দাবি নিয়ে তিনি বলেন, সংস্কার নিয়ে গণভোট করেন। পিআর পদ্ধতি ও নির্বাচনের তারিখ নিয়েও গণভোট করেন। জনগন সব ঠিক করবে, জনগণ যা বলবে, আমরা তা মেনে নেবো।
সাবেক এই সংসদ সদস্য বলেন, আমাদের বন্ধুরা যখন বলে আমরা ক্ষমতায় গিয়ে এটা-ওটা করব। আমি বলতে চাই, আপনারা যে ক্ষমতা পাবেন এই গ্যারান্টি পেলেন কোথায়, এই গ্যারান্টি তো হাসিনা পেয়েছিল, হাসিনা ভাবতো সে ভোট ছাড়াই ক্ষমতায় যাবে। এখানে কিন্ত ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাওয়া যায়। যেনতেনভাবে ভোট কেটে আরেকটি নির্বাচন হওয়ার গন্ধ পাওয়া যায়।
নির্বাচন নিয়ে সামেন ও ব্র্যাকের গবেষণার ফলাফল তুলে ধরে তিনি বলেন, সামেন নামে একটি সংগঠনের সার্ভেতে দেখা গেছে তারা ৪২ শতাংশ আর আমরা ৩২ শতাংশ। সর্বশেষ ২ সাপ্তাহ আগে ব্র্যাকের একটি সার্ভে হয়েছিল, সেখানে তারা ১২ শতাংশ আর আমরা সাড়ে ১০ শতাংশ। আগে প্রার্থক্য ছিল ১০ শতাংশ, এখন পার্থক্য দেড় পার্সেন্ট। ব্যবধান তো কমছে। আরও ৫ মাস আছে সামনে। আরও অনেক চাঁদাবাজি ও দখল আছে, মানুষ মেরে ফেলার সম্ভাবনা আছে, তখন পার্সেন্টেজ আরও কমবে ইনশাআল্লাহ।
জামায়াতের এই নায়েবে আমির বলেন, আমরা যারা পিআর আর সংস্কার চাই, তারা আবার ঐক্যবদ্ধভাবে এই দাবি পূরণে সরকারকে বাধ্য করবো। আমরা চাই না এত রক্তপাতের পর আবার কিছু করতে। আমরা শান্তি ও সমোঝতা চাই।
বিএনপি সহ সব দলের প্রতি অনুরোধ করে তিনি বলেন, আমি বিএনপিসহ সব দলকে অনুরোধ করে বলতে চাই, আমরা ইন্টার পার্টি ডায়ালগ, বৈঠক করি। সবাই মিলে রাউন্ডটেবিল করি। সত্যিকারে কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশ গড়ার সমোঝোতায় আসি, এবং উৎসবমুখর একটি নির্বাচন জনগণকে দেওয়ার চেষ্টা করি।
Cox's Bazar Office: Main Road, Kolatli, Cox's Bazar, Bangladesh.
Ukhia Office: Main Road, Ukhia, Cox's Bazar, Bangladesh.
Email: shimantoshohor@gmail.com
© 2025 Shimantoshohor.com. All rights reserved.