আদালতের নির্দেশে কক্সবাজার শহরের বাঁকখালী নদীর তীরবর্তী এলাকায় পরিচালিত উচ্ছেদ অভিযানে দখলমুক্ত জায়গায় পুনঃদখল শুরু করেছে। এই পুন:নির্মিত অবৈধ উচ্ছেদ করে পুনঃদখলমুক্ত করতে অভিযান চালিয়েছে বিআইডব্লিউটিএ ও জেলা প্রশাসন।
এসময় সেখানে অবৈধভাবে পুনঃনির্মিত অর্ধশতাধিক স্থাপনার মালিকদের একদিনের মধ্যে সরিয়ে নিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আর নির্দেশনা অমান্যকারিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে প্রশাসনের সংশ্লিষ্টরা।
শুক্রবার বেলা ১১ টায় কক্সবাজার শহরের কস্তুরাঘাট সংলগ্ন বাঁকখালী নদীর তীরবর্তী এলাকায় এ অভিযান চালানো হয়েছে।
অভিযান শেষে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ ( বিআইডব্লিউটিএ ) এর কক্সবাজারস্থ বন্দর কর্মকর্তা মোহাম্মদ আব্দুল ওয়াকি বলেন, গত ১ থেকে ৫ সেপ্টেম্বর বাঁকখালী নদীর কস্তুরাঘাটসহ আশপাশের এলাকায় জেলা প্রশাসনের সহায়তায় বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ গড়ে উঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান চালায়। এসময় ৫ শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে অন্তত শতাধিক একর জায়গা দখলমুক্ত করা হয়েছিল। কিন্তু মাস না পেরোতেই দখলমুক্ত জায়গায় অবৈধ দখলদাররা আবারো স্থাপনা পুনঃনির্মাণ শুরু করে। বিষয়টি নজরে আসার পর বিআইডব্লিটিএ কর্তৃপক্ষ জেলা প্রশাসনের সহায়তায় পুনঃনির্মিত অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান চালিয়েছে।
এসময় বিআইডব্লিউটিএ এর বন্দর কর্মকর্তা সাংবাদিকদের বলেন, অভিযানে দখলমুক্ত জায়গায় পুনঃনির্মিত অর্ধশতাধিক অবৈধ স্থাপনার মালিকদের মালামাল সরিয়ে নিতে একদিনের সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে। আর বেঁধে দেওয়া সময়সীমার মধ্যে যেসব অবৈধ দখলদারেরা স্থাপনা সরিয়ে নেবে না; তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিগত ২০১৯ সালে বাঁকখালী নদীর সীমানা নির্ধারণে পরিচালিত যৌথ জরিপের আলোকে যেসব সব স্থাপনা অবৈধ হিসেবে চিহ্নিত হবে তা উচ্ছেদ করা হবে তথ্য দিয়ে বন্দর কর্মকর্তা মোহাম্মদ আব্দুল ওয়াকি বলেন, “ নদী বন্দর নির্মাণের জন্য নির্ধারিত জায়গায় গড়ে উঠা সব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে বিআইডব্লিটিএ কর্তৃপক্ষ ভবিষ্যতে বৃহৎ পরিসরে অভিযান চালাবে। বিগত ২০১৯ সালের যৌথ জরিপের পর যেসব স্থাপনা গড়ে উঠেছে তা অবৈধ এবং এসব স্থাপনা উচ্ছেদে সুপরিকল্পিত অভিযান চালানো হবে। “
প্রসঙ্গত, কক্সবাজারের প্রধান নদী বাঁকখালীর সীমানায় থাকা সব দখলদারের তালিকা তৈরি করে আগামী চার মাসের মধ্যে উচ্ছেদ এবং দূষণ নিয়ন্ত্রণে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে গত ২৪ আগস্ট সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। ওই নির্দেশনার এক সপ্তাহের মধ্যেই গত ২৯ আগস্ট কক্সবাজার সফর করেন নৌপরিবহন উপদেষ্টা। আর তার সফরের দুইদিন পর গত ১ থেকে ৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাঁকখালী নদীর তীরে গড়ে উঠা নানা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান চালানো হয়। কিন্তু ওই সময় অবৈধ দখলদারদের বাঁধার মুখে প্রশাসন অভিযান স্থগিত করে।
আদালতের রায়ে বলা হয়, কক্সবাজার জেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত বাঁকখালী নদীর বর্তমান প্রবাহ এবং আরএস জরিপের মাধ্যমে সীমানা নির্ধারণপূর্বক নদীটিকে সংরক্ষণ করতে হবে। এ ছাড়া নদীর সীমানায় থাকা সব দখলদারের তালিকা তৈরি করে আগামী চার মাসের মধ্যে উচ্ছেদ এবং দূষণ নিয়ন্ত্রণে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।