ভূগোল প্রথম ও দ্বিতীয় পত্রে ভালো করে প্রস্তুতি নিলে বেশি নম্বর পাওয়া সম্ভব। ভূগোলের দুই পত্রের প্রতিটিতে সৃজনশীল প্রশ্ন থাকবে ৮টি, আর উত্তর করতে হবে ৫টি প্রশ্নের। নম্বর ১০ করে মোট ৫০ নম্বর। বহুনির্বাচনি অংশে ২৫টি প্রশ্নের উত্তর করতে হবে, নম্বর থাকবে ২৫। আর ব্যবহারিক পরীক্ষায় ২৫ নম্বর। ভালো করে রিভিশন দিয়ে সঠিক উত্তর লেখলেই ভূগোলে এ+ পাওয়া সম্ভব।
* বহুনির্বাচনি প্রশ্ন
পরীক্ষায় এ+ পাওয়া অনেকটা নির্ভর করে বহুনির্বাচনি প্রশ্নের ওপর। তাই পরীক্ষায় বহুনির্বাচনি অংশে অবশ্যই ভালো করতে হবে। বহুনির্বাচনি অংশে ২৫টি প্রশ্ন থাকবে। নম্বর ২৫। প্রতিটি প্রশ্নের উত্তরের মধ্যে সঠিক উত্তরটি বেছে নিলেই তুমি ভালো নম্বর পাবে। যে অধ্যায়গুলো পরীক্ষায় আছে, তা ভালো করে রিভিশন দাও। বহুনির্বাচনি অংশে ভালো করতে হলে পৃথিবীর গঠন; ভূমিরূপ পরিবর্তন; বায়ুমণ্ডল ও বায়ুদূষণ; খনিজ ও শক্তি সম্পদ এবং শিল্প ইত্যাদি অধ্যায় থেকে প্রশ্ন হবে। এ অধ্যায়গুলোর সব ধরনের খুঁটিনাটি তথ্য পড়বে, সেখান থেকেই প্রশ্ন হবে। মনে আত্মবিশ্বাস রাখবে, দেখবে প্রশ্নের উত্তর ঠিকভাবে করতে পেরেছ।
* জ্ঞানমূলক ও অনুধাবনমূলক প্রশ্ন
প্রশ্ন নির্বাচন করাটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। যে প্রশ্নের উত্তর তুমি সহজে উত্তর করতে পারবে, সেটাই উত্তর করবে। জ্ঞানমূলক ও অনুধাবনমূলক প্রশ্নের উত্তর লেখার বেলায় জটিল আর অপ্রাসঙ্গিক কিছু লিখবে না। তোমার পড়া পাঠ্যবই থেকেই উত্তর লিখবে। আর তাই তোমার জন্য ভালো নম্বর বয়ে আনবে। পরীক্ষায় জ্ঞান ও অনুধাবনমূলক প্রশ্ন সরাসরি পাঠ্যবই থেকে কমন পাওয়া যায়। সাধারণত এ অংশে বিভিন্ন সংজ্ঞা, কী, কাকে বলে, বলতে কী বোঝায়, ব্যাখ্যা কর ইত্যাদি ধরনের প্রশ্ন হয়ে থাকে। এ ক্ষেত্রে পাঠ্যবই ভালো করে পড়তে হবে।
* প্রয়োগমূলক ও উচ্চতর দক্ষতামূলক প্রশ্ন
প্রয়োগ ও উচ্চতর দক্ষতার প্রশ্ন দুটি দেওয়া হয় উদ্দীপকের আলোকে। আর এ উদ্দীপক পাঠ্যপুস্তকের আলোকেই তৈরি হয়। তবে পাঠ্যপুস্তকের সমস্যাটি হুবহু উদ্ধৃত করা হবে না। মৌলিক ধারণা ঠিক রেখে বা গুণগত পরিবর্তন না করে শুধু কাঠামোগত পরিবর্তন করে বাস্তব বিষয় নিয়ে একটি উদ্দীপক থাকবে। এর উদ্দীপক বিভিন্ন চিত্র, মানচিত্র, গ্রাফ, তথ্য, বিবৃতি ইত্যাদি যেকোনো বিষয়ের আলোকে তৈরি করা হবে। উদ্দীপকের ‘গ’ ও ‘ঘ’ নম্বর প্রশ্নের উত্তর করার আগে উদ্দীপকটি ভালো করে পড়ে নিতে হবে। এ প্রশ্নের উত্তর লেখার ক্ষেত্রে পরীক্ষার্থীদের ভিন্ন উত্তর হতে পারে, তাতে কোনো সমস্যা নেই। তুমি যে মতামত দেবে, তার ওপর সঠিক যুক্তি ও প্রমাণ দেখাতে পারলেই উত্তর সঠিক হবে।
* পাঠ্যবইকে গুরুত্ব দিতে হবে
সময় ভাগ করে ভূগোলের অধ্যায়গুলো রিভিশন দাও। পরীক্ষার আগের যে সময়টা ভূগোলের জন্য দেবে, সে সময়ে মন দিয়ে খুঁটিয়ে ভূগোল পাঠ্যবই পড়বে। নামকরা কলেজের প্রশ্ন দেখ। দেখবে আত্মবিশ্বাস বাড়বে। পাঠ্যবইকে গুরুত্ব দাও। সংক্ষিপ্ত সিলেবাস অনুযায়ী বোর্ড থেকে তোমরা যে পরীক্ষা দিয়েছ, সেগুলোকে বেশি গুরুত্ব দাও। মনোযোগসহকারে বারবার সেগুলো অনুশীলন কর। দেখবে কঠিন বিষয়ও সহজ মনে হবে।
* মানচিত্র ও ছবি আঁকা
ভূগোলে ছবি আঁকার প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে। প্রশ্নে ছবির কথা বলা না হলেও তোমাকে বুদ্ধি করে প্রশ্নের বিষয়বস্তু অনুসারে ছবি আঁকতে হবে। উদ্দীপকে যদি চিত্র বা গ্রাফ দেওয়া থাকে, তাহলে উত্তর লেখার সময় তুমিও চিত্র বা গ্রাফ ব্যবহার করবে। এতে প্রশ্নের উত্তর লেখায় তোমার নম্বর বাড়বে। চিত্র আঁকার সময় অবশ্যই ভালো মানের পেনসিল ব্যবহার করবে। মানচিত্র পয়েন্টিং করবে, কোন বিষয়টি কী, তা সহজে বুঝতে পারবেন পরীক্ষক। ভূগোলে বেশি নম্বর পাওয়ার জন্য তোমরা বাসায় পরীক্ষার আগের দুই দিন মানচিত্র পয়েন্টিং অনুশীলন করবে, তবেই পরীক্ষার হলে সহজে করতে পারবে।
* অপ্রাসঙ্গিক কিছু
প্রশ্নের উত্তরে অপ্রাসঙ্গিক কিছু লিখবে না। অযথা প্রশ্নের উত্তর বড় করবে না। প্রশ্নে ঠিক যা চেয়েছে, তা লিখলেই তুমি ভালো নম্বর পাবে। মনে রাখবে, এই বিষয় অনেক গুরুত্বপূর্ণ। ভালো নম্বর পাওয়ার বেলায় অনেক সহায়তা করবে।
* লেখক: মো. শাকিরুল ইসলাম, প্রভাষক, ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ঢাকা