কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে দাবিকৃত চাঁদা না পেয়ে বৈধ টোল ইজারাদারের ওপর হামলা চালিয়ে তাকে গুরুতর আহত করার অভিযোগ উঠেছে জামায়াতে ইসলামীর উপজেলা পর্যায়ের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। ঘটনার পর আহত টোল ইজারাদার রাকিব হোসেন বর্তমানে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বিষয়টি নিয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন তার বোন, যা তদন্ত করছে পুলিশ।
হামলার ঘটনাটি ঘটে গতকাল বুধবার বিকেলে কুমারখালী পৌর বাস টার্মিনালে। আহত রাকিব হোসেন কুমারখালীর দুর্গাপুর গ্রামের বাসিন্দা ও টার্মিনালের বৈধ টোল ইজারাদার।
তিনি অভিযোগ করেন, চলতি বছরের শুরুতে পৌর প্রশাসনের টেন্ডারের মাধ্যমে সাড়ে ১৬ লাখ টাকা রাজস্ব দিয়ে তিনি বাস টার্মিনাল ও পৌর পার্কিংয়ের (অটো সিএনজি স্ট্যান্ড ও লোড-আনলোড পয়েন্ট) ইজারা পান। শুরু থেকেই উপজেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর আফজাল হোসেন এ ইজারা তার দলের লোকজনকে দিতে চাপ সৃষ্টি করেন এবং মাসিক ২ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন।
রাকিব বলেন, ‘চাঁদা না দেওয়ায় আফজাল হোসেন আমাকে ও আমার লোকজনকে হুমকি দিয়ে আসছিলেন। বুধবার ওই দাবিকৃত টাকা না দেওয়ার অজুহাতে তার নেতৃত্বে ১৫-২০ জনের একটি দল অতর্কিতে আমার ওপর হামলা চালায়। ধারালো অস্ত্র দিয়ে আমাকে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা করা হয়। আমি কোনোভাবে পাশের একটি দোকানে ঢুকে পড়ে কুমারখালী থানায় ফোন করে সাহায্য চাই।’
চিকিৎসকের ভাষ্যে, রাকিব হোসেনের মাথায় ৭ ইঞ্চি লম্বা ক্ষত দেখা গেছে। কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের ১০ নম্বর সার্জারি ইউনিটের চিকিৎসক ডা. সাকিব বলেন, ‘ওটি করে ক্ষতস্থানে সেলাই দেওয়া হয়েছে। রিপোর্ট পর্যবেক্ষণ চলছে। আপাতত স্থিতিশীল থাকলেও জটিলতা এড়াতে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।’
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী গ্যারেজ শ্রমিক রবিউল ইসলাম বলেন, ‘বিকেলে জামায়াত নেতার ছেলে শুভন মোটরসাইকেলে টার্মিনালে এসে এক অটোচালকের কাছ থেকে টোল আদায়ে বাধা দেন। তখন বাকবিতণ্ডা থেকে তাকে মারধর করা হয়। কিছুক্ষণের মধ্যেই আফজাল হোসেন তার লোকজন নিয়ে এসে ইজারাদারের টোল রশিদ ছিনিয়ে নিয়ে মারধর শুরু করেন।’
তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আফজাল হোসেন। তিনি বলেন, ‘ইজারাদার নির্ধারিত এলাকার বাইরে গিয়ে অবৈধভাবে চাঁদা তুলছিল। আমার ছেলে শুভনকে তারা মারধর করে। এ নিয়ে এলাকাবাসীর ক্ষোভ ছিল। স্থানীয়রা প্রতিবাদ করতে গেলে মারামারি হয়। এর সঙ্গে জামায়াতের কোনো সম্পর্ক নেই। রাজনৈতিকভাবে আমাকে হেয় করতেই এসব করা হচ্ছে।’
কুমারখালী থানার ওসি সোলাইমান শেখ বলেন, ‘আহত রাকিবের বোন রোমানা আক্তার নিশি বাদী হয়ে জামায়াত নেতা আফজাল হোসেনসহ ৯ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত ৫-৭ জনকে আসামি করে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’