চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে ফিশিং বোটে নিষিদ্ধ ট্রলিং সরঞ্জাম স্থাপনের মূলহোতা এক ভারতীয় নাগরিককে যৌথ অভিযানে আটক করেছে কোস্ট গার্ড ও সেনাবাহিনী।
মঙ্গলবার (১২ আগস্ট ) বিকেলে কোস্ট গার্ডের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট রাফিদ-আস-সামি জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানা যায় বাঁশখালীর শেখেরখীল এলাকার একটি গোডাউনে ফিশিং বোটে নিষিদ্ধ ‘আর্টিসনাল ট্রলিং সরঞ্জাম’ তৈরির কাজ চলছে। এ তথ্যের ভিত্তিতে সোমবার মধ্যরাত সাড়ে ১২টায় কোস্ট গার্ড কন্টিনজেন্ট বাঁশখালী ও সেনাবাহিনী যৌথ অভিযান চালায়।
অভিযানে গোডাউন থেকে প্রায় ২৫ লাখ টাকা মূল্যের ৭টি অবৈধ ট্রলিং জাল, ৩৪ পিস ইয়াবা (মূল্য প্রায় ১৭ হাজার টাকা), ১০ গ্রাম গাঁজা (মূল্য ৩০০ টাকা) ও নগদ ৭৩ হাজার ২৩০ টাকা জব্দ করা হয়। এসময় ৩ জন বাংলাদেশি কারিগর ও মূলহোতা ভারতীয় নাগরিক পণ্ডিত বিশ্বাসকে আটক করা হয়। আটক বাংলাদেশিরা হলেন—বরগুনার অমল চন্দ্র (৪৫), মোংলার নাথন বিশ্বাস (৬০) ও সাতক্ষীরার আকাশ বিশ্বাস (৩৫)।
আটককৃত ভারতীয় নাগরিকের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গোডাউনের মালিক মান্নান মিয়ার বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে পণ্ডিত বিশ্বাসের ভারতীয় পাসপোর্ট উদ্ধার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, পণ্ডিত বিশ্বাস দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশে ফিশিং বোটে নিষিদ্ধ ‘আর্টিসনাল ট্রলিং’ সরঞ্জাম স্থাপন করে আসছিলেন। তিনি ১৯ অক্টোবর ২০২৩ সাল থেকে সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে নিয়মিত বাংলাদেশে যাতায়াত করতেন। সর্বশেষ ২ মে ২০২৫ তারিখে দেশে প্রবেশ করে প্রথমে বরগুনা জেলার পাথরঘাটায় কাজ করেন এবং ২৫ জুলাই থেকে বাঁশখালীতে বিভিন্ন ফিশিং বোটে নিষিদ্ধ সরঞ্জাম স্থাপনের কাজ করছিলেন।
কোস্ট গার্ড জানায়, কাঠের ফিশিং বোটে অবৈধভাবে ট্রলিং সরঞ্জাম ও ছোট ফাঁসের ‘বেহুন্দি জাল’ বসিয়ে যান্ত্রিক ট্রলারে রূপান্তর করা হয়। এতে প্রবাল, সামুদ্রিক গাছপালা ও পোনামাছ ধ্বংস হয়ে সামুদ্রিক ইকোসিস্টেম হুমকির মুখে পড়ে, যা ভবিষ্যতে বঙ্গোপসাগরে মাছের ঘাটতি তৈরি করতে পারে।
জব্দকৃত আলামত ও আটক আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। দেশের সুনীল অর্থনীতি রক্ষায় সমুদ্র, উপকূল ও নদী তীরবর্তী এলাকায় নজরদারি জোরদার থাকবে বলে কোস্ট গার্ড জানিয়েছে।