বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের দুই নারী কেবিন ক্রুর বিরুদ্ধে প্রেমের নামে প্রতারণা ও নগদ অর্থ, সোনা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ করেছেন বিমানের বিজনেস ক্লাসের দুই যাত্রী। তাদের মধ্যে একজন বিচার চেয়ে বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর আবেদন করেছেন। আরেকজন অভিযোগের পাশাপাশি মামলাও করেছেন আদালতে।
বিমানের অভিযুক্ত দুই কেবিন ক্রুর নাম এম এস টি মৌরি ও খাদিজা সুলতানা শিমু। এর মধ্যে মৌরির বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন কাতার প্রবাসী বাংলাদেশি ব্যবসায়ী নাছির উদ্দিন। আর শিমুর বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছেন ওমর ফারুক চৌধুরী। তিনি দেশের একটি বেসরকারি এয়ারলাইন্সের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।
ভুক্তভোগী দুই যাত্রীর অভিযোগ, মৌরি ও শিমু ভালো বন্ধু। তারা পরিকল্পনা করে অধিকাংশ সময় একই ফ্লাইটে দায়িত্ব পালন করেন। এ সুযোগে বিজনেস ক্লাসের যাত্রীদের সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলেন। সুযোগ বুঝে নিজেরাই দেন প্রেমের প্রস্তাব। তারপর বিয়ের প্রলোভনে প্রেমিকের কাছ থেকে হাতিয়ে নেন নগদ অর্থ, সোনা, আইফোনসহ মূল্যবান মালামাল। পরে বিয়ের চাপ দিলে সটকে পড়েন।
তবে ওই অভিযোগ অস্বীকার করেন কেবিন ক্রু এম এস টি মৌরি। তিনি জানান, তিনি কারও সঙ্গে প্রতারণা করেননি। তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ মিথ্যা। অন্যদিকে, এটা ব্যক্তিগত বিষয় বলে এড়িয়ে যান শিমু।
মৌরি ও তার ক্রাইম পার্টনার শিমু বিমানের ইউনিফর্ম ও ইমেজ ব্যবহার করে প্রতিটি ডেসটিনেশনে হাইপ্রোফাইলের প্রফেশনাল ব্যক্তিদের সঙ্গে প্রতারণা করছে। তারা প্রেমের জালে ফেলে অর্থ, সম্মান লুট করে নিচ্ছে। আমি চাই বিমান যাতে তাদের চাকরিচ্যুত করে দৃষ্টান্তমূলক নজির স্থাপন করে।-ভুক্তভোগী নাছির উদ্দিন
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের সংশ্লিষ্টরা জানান, বেশ কয়েক বছর ধরে বিমানের কেবিন ক্রুদের বিরুদ্ধে এ ধরনের প্রতারণার কথা শোনা যাচ্ছে। তবে ‘ইজ্জতের ভয়ে’ যাত্রীদের কেউ বিমানে লিখিত অভিযোগ দেননি। ফলে কারও বিরুদ্ধে তেমন ব্যবস্থা নেওয়া যায়নি। কিন্তু এবার দুজনের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগের সঙ্গে ছবি, ভিডিওসহ পর্যাপ্ত তথ্য-প্রমাণ জমা দিয়েছেন ওই দুই ভুক্তভোগী। এখন বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত চলছে। অভিযোগ প্রমাণ হলে চাকরিবিধি অনুযায়ী তাদের চাকরিচ্যুতসহ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যাতে এ ধরনের প্রতারণার সাহস না পান অন্য কেবিন ক্রুরা।
গত ২১ আগস্ট একজন কেবিন ক্রুর বিরুদ্ধে বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান বরাবর অভিযোগ করেন কাতার প্রবাসী নাছির উদ্দিন। তার লিখিত অভিযোগে বলা হয়, ‘২০২৪ সালের ১০ অক্টোবর কাতারের একটি হোটেলে মৌরি নিজেকে বিমানের কেবিন ক্রু হিসেবে পরিচয় দিয়ে আমার সঙ্গে পরিচিত হন। তখন আমার স্ট্যাটাস দেখে কমিটেড রিলেশনে যেতে ইচ্ছা প্রকাশ করেন। ১৬ অক্টোবর আবার দোহা ফ্লাইটে গিয়ে আমাকে কল করে হোটেল লবিতে ডেকে প্রেমের প্রস্তাব দেন। পরদিন তাকে আমি লং ড্রাইভে নিয়ে যাই বিচে। ১৬ থেকে ২০ অক্টোবর লে ওভারে আমার সঙ্গে ছিল। এ সময় আমার কাছে শপিং করে দিতে আবদার করে এবং তা করে দেই।’