ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মীরের চাশোতি গ্রামে মেঘ বিস্ফোরণে ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। মুহূর্তের মধ্যেই চার ফুট উঁচু পাথর-কাদার স্রোত ও অস্বাভাবিক বৃষ্টিপাতে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যায় নিচু অঞ্চলে যা ছিল তার সবই ভাসিয়ে নিয়ে গেছে। এতে করে নিচু জায়গাগুলো ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) জম্মু ও কাশ্মীরের কিশতোয়ার জেলার চাশোটি এলাকায় ভয়াবহ এ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, মচৈল মাতা মন্দির দর্শনের জন্য কয়েকশো পুণ্যার্থী হাজির হয়েছিলেন চাশোতী গ্রামে। সেখানে পুণ্যার্থীদের জন্য অস্থায়ী শিবিরের আয়োজন করা হয়েছিল।
এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, সেদিন আবহাওয়া যে খুব দুর্যোগপূর্ণ ছিল এমনটা নয়। কিন্তু অস্বাভাবিক বৃষ্টিপাতে হঠাৎ আকস্মিক বন্যায় অনেকেই নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতে পারেননি। চাশোতি এলাকার ঘরবাড়ি, পুণ্যার্থীদের অস্থায়ী শিবিরসহ বন্যার পানিতে ভেসে যান শত শত মানুষ।
তিনি আরও জানান, তার সঙ্গে স্ত্রী এবং কন্যা ছিল। তিনজনেই ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে গিয়েছিলেন। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে।
বেঁচে ফেরা এক পুণ্যার্থী বলেন, বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা। পুণ্যার্থীরা শিবিরে অপেক্ষা করছিলেন। হঠাৎ একটা জোরালো বিস্ফোরণের আওয়াজ শুনতে পাই। তখনও কেই বুঝতেই পারেনি কি হতে যাচ্ছে তাদের সঙ্গে। বিস্ফোরণের মাত্র ২ মিনিটের মধ্যেই অস্বাভাবিক বন্যা, ৪ ফুট-উঁচু কাদা ও পাথরের স্রোত আমাদের চারদিক থেকে ঘিরে ফেলে। সেই স্রোত থেকে বাঁচতে চেষ্টা করছিলেন অনেকে। কিন্তু সেই সুযোগ কেউ পাননি। শত শত মানুষ ভেসে গেছে এবং সেই ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে যায়।
আরও এক পুণ্যার্থী বলেন, আকস্মিক বন্যায় আমাদের ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল। কোনো মতে একটি গাড়িকে আঁকড়ে ধরি। পরে গাড়ির নিচে আটকে যাই। আমার মা একটি বিদ্যুতের খুঁটির নিচে আটকে গিয়েছিলেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মেঘ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৬০ জনের দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আহত হয়েছেন ১০০ জনেরও বেশি। তাদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। অনেক পুণ্যার্থী এখনো নিখোঁজ রয়েছেন। সেনা, জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী (এনডিআরএফ) এবং স্থানীয় প্রশাসন উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে। এই ধ্বংসস্তূপ থেকে এখন পর্যন্ত ১৬০ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে।