ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ভিপির কর্মকাণ্ড নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিপি হয়ে কি ম্যাজিস্ট্রেটসির ক্ষমতা পেয়েছেন যে, দোকান ফাইন করছেন এবং সেই অর্থ আবার জমা দিচ্ছেন বাইতুল মালে?
রবিবার (২১ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘৭ নভেম্বর প্রজন্ম’ আয়োজিত ড. মারুফ মল্লিকের একটি বইয়ের আলোচনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
রিজভী প্রশ্ন তোলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে কোন দোকান অবৈধ, এটা চিহ্নিত করে ফাইন করার এখতিয়ার কি ডাকসু ভিপির আছে? এটা তো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাজ। ছাত্রনেতা হিসেবে আপনি প্রশাসনকে জানাতে পারেন, কিন্তু নিজে গিয়ে অর্থদণ্ড আরোপ করা, এর আইনি ভিত্তি কোথায়?’
তিনি আরও অভিযোগ করেন, ‘ফাইন করা টাকাগুলো জমা দেওয়া হচ্ছে জামায়াতের বাইতুল মালে। এটা অত্যন্ত প্রশ্নবিদ্ধ ও উদ্বেগজনক। এতে তো রাষ্ট্রের মধ্যে রাষ্ট্র গঠনের প্রবণতা দেখা যাচ্ছে, যেটা আমরা অতীতেও দেখেছি।’
বিশ্ববিদ্যালয়কে ‘জ্ঞানচর্চার কেন্দ্র’ আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, ‘ডাকসুর মূল দায়িত্ব হওয়া উচিত শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের নিয়ে একাডেমিক পরিবেশ রক্ষা করা। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, দোকান বৈধ না অবৈধ সেটা চিহ্নিত করাই যেন প্রধান কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অথচ এই বিষয়ে কোনো গণমাধ্যমে, এমনকি সোশ্যাল মিডিয়াতেও তেমন আলোচনা নেই।’
বিএনপির এই নেতা অভিযোগ করেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে শুধু বিএনপিকেই নিশানা করা হচ্ছে, অথচ অন্য দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধেও নানা অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। ‘সিলেটের পাথর উত্তোলন, বালু মহাল কিংবা নারীঘটিত নানা ঘটনা সবখানে জামায়াত বা অন্য দলের লোকদের নাম আসছে। কিন্তু এসব বিষয়ে প্রচার কম, বিএনপির ছোট কোনো ঘটনায়ই ফলাও প্রচার হচ্ছে’।
নিজ দলের দায় স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘একটা পরিবারে দুষ্টু ছেলে থাকতেই পারে। প্রশ্ন হচ্ছে, বাবা-মা তাকে শাসন করছেন কি না। বিএনপি যদি নিজের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়, বহিষ্কার করে, শাস্তি দেয়, সেটা কি তুলে ধরা হচ্ছে?’
সরকারের প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘প্রথমে সরকারের একজন উপদেষ্টা এসব বিষয় নিয়ে বললেন, এরপর একই সুরে কথা বলছে একটি রাজনৈতিক দল। অথচ অভিযোগ তো দুই দিকেই রয়েছে। তাহলে একদিকে চোখ বুজে থাকার মানে কী?’