প্রশাসনে এখনো স্বৈরাচারের প্রেতাত্মারা রয়েছে এবং তারা আগামীতে একটি সুন্দর নির্বাচন হতে বাধা দেবে বলে নির্বাচনী সংলাপে বক্তারা মন্তব্য করেছেন। রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) এ সংলাপ হয়।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন। উপস্থিত ছিলেন চার নির্বাচন কমিশনার, ইসির সিনিয়র সচিবসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
সংলাপে কবি মোহন রায়হান বলেন, এখনো প্রশাসনের রন্ধ্রে রন্ধ্রে স্বৈরাচারের প্রেতাত্মারা রয়েছে। তারা কিন্তু সুন্দর একটি নির্বাচন হতে বাধা দেবে। এ বিষয় ইসিকে সজাগ থাকতে হবে। নির্বাচন অবাধ করতে গেলে প্রথমে ইসির সদিচ্ছা প্রয়োজন বলেও জানান তিনি।
এ সময় দুর্নীতিবিরোধী সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) পরিচালক মোহাম্মদ বদিউজ্জামান মত দেন, ‘না’ ভোটের ব্যবস্থা যেন সব আসনেই থাকে। নতুন বিধিমালা অনুযায়ী শুধু কোনো আসনে একজন প্রার্থী থাকলে তাকে ‘না’ ভোটের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হবে।
বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) পরিচালক রশিদ আহমেদ হোসাইনি দাবি করেন, শুধু ঋণখেলাপি নয়, যারা অর্থপাচারকারী তারাও যাতে নির্বাচনে অংশ নিতে না পারেন সেই আইন করতে হবে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ ইয়াহইয়া আখতার বলেন, ‘আগেও এমন সংলাপে এসে ভালো ভালো কথা বলেছিলাম, কিন্তু সেটা আমলে নেওয়া হয়নি। এখনো এসেছি, কতটুকু রাখা হবে সেটা সময় বলে দেবে। তবে ডাকা হয়েছে, আলোচনা হচ্ছে, এটা ভালো। আসুন আগামী নির্বাচন সবাই মিলে এমনভাবে করি, যেটা সুন্দর নির্বাচনের উদাহরণ হয়ে থাকবে।’
অধ্যাপক ইয়াহইয়া পরামর্শ দেন, ইসি কর্মকর্তাদের যেন জাতীয় নির্বাচনের সময় রিটার্নিং অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্ব দেওয়া হয়। তারা সারা বছর নির্বাচন নিয়ে কাজ করেন, তারা এ বিষয় অভিজ্ঞ। সাধারণ আমলারা নির্বাচনের বিষয়ে ইসি কর্মকর্তাদের মতো এত অভিজ্ঞ নন।
ইসিকে উদ্দেশ করে সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন কবির বলেন, ‘সার্বিক পরিস্থিতিতে আপনাদের প্রতি জনগণের প্রত্যাশা অনেক। গত ১৫ বছর বা এখনো সহিংসতা স্বাভাবিক বিষয় হয়ে গেছে। নির্বাচনের সময় আপনারা এটা কীভাবে মোকাবিলা করবেন সেটা দেখার বিষয়।’
অনুষ্ঠানের শুরুতে সিইসি নাসির বলেন, ‘সুষ্ঠু, সুন্দর ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য আমরা প্রতিশ্রুতিবন্ধ। নির্বাচনের প্রস্তুতি অনেক এগিয়েছি। যে গ্যাপ (ফাঁকা) আছে আশা করছি আপনাদের সঙ্গে সংলাপে সেটা পূরণ হবে।’