বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে টেকনাফের বিচ্ছিন্ন দ্বীপ সেন্টমার্টিন। বেড়েছে পানির উচ্চতা ও তীব্রতা। অনেকের চুলায় রান্নাবান্না বন্ধ হয়ে গেছে। দেখা দিয়েছে খাদ্য ও পানীয় সংকট। তবে হতাহতের খবর মেলেনি।
স্থানীয় বাসিন্দা ও সংবাদকর্মী আব্দুল মালেক জানিয়েছেন, ঢেউয়ের আঘাতে পাকা স্থাপনাসহ অনেক বসতবাড়ি ও আবাসিক হোটেল বিধ্বস্ত হয়েছে। উপড়ে পড়েছে গাছপালা। বসত বাড়িতে ঢুকে গেছে জোয়ারের পানি। দুই দিনের তাণ্ডবে দ্বীপ যেন শত্রুর আঘাতে বিধ্বস্ত একটি জনপদ। অনেক পুরনো বসত বাড়িও নিশ্চিহ্ন হওয়ার পথে।
স্থানীয়রা জানিয়েছে, পানির তীব্রতায় সাগরের কাছাকাছি প্রায় ১১ টি আবাসিক হোটেল বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।সেগুলো হলো, হোটেল আবকাশ পর্যটন, নোনাজল বীচ রিসোর্ট, আটলান্টিক রিসোর্ট, বীচ ক্যাম্প রিসোর্ট, নিল হাওয়া বীচ রিসোর্ট, শান্তি নিকেতন বীচ রিসোর্ট, মেরিন বীচ রিসোর্ট, পাখি বাবা রিসোর্ট, সিভিউ রিসোর্ট, ডিমার্স প্যারাডাইস রিসোর্ট,সানডিবিস রিসোর্ট।
সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ফয়েজুল ইসলাম জানান, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে ঢেউয়ের আঘাত তাণ্ডব চালিয়েছে। ১১টি হোটেল বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পাশাপাশি জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে ১-৩ফুট অধিক উচ্চতায় প্রবাহিত হওয়ায় দ্বীপের বিভিন্ন অংশের গাছপালা ভেঙ্গে গেছে। লোকালয়ে জোয়ারের লবণাক্ত পানি ঢুকে শতাধিক ঘরবাড়ি প্লাবিত হয়েছে।
চেয়ারম্যান বলেন, দ্বীপের অনেক পরিবার এখন ঘরবাড়ি হারা। রাত যাপন করছে বাইরে। খাবার ও পানিয়ের সংকট দেখা দিয়েছে। সেন্টমার্টিনে এমন ভয়াবহ অবস্থা এর আগে হয়নি।
দ্বীপের উত্তরপাড়ার বাসিন্দা মো. ওসমান জানান, বীচ সংলগ্ন হোটেলেগুলো জোয়ারের পানির আঘাতে অধিকাংশ তলিয়ে গেছে। পানি নেমে যাওয়ায় ক্ষতচিহ্ন দেখা যাচ্ছে।
আবহাওয়ার প্রতিকুল পরিস্থিতি মোকাবেলা করেই জীবন কাটাতে হচ্ছে সেন্টমার্টিনবাসীকে। এখানকার বাসিন্দাদের রক্ষা করতে হলে টেকসই বেড়িবাঁধের কোনো বিকল্প নেই মনে করেন স্থানীয় বাসিন্দা কেফায়েত খান।
তিনি জানান, গত দুইদিনের জোয়ারের পানিতে লন্ডভন্ড সেন্টমার্টিনের চারিপাশ। দেখা দিয়েছে ভয়াবহ অবস্থা। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে নেমে আসতে পারে মানবিক বিপর্যয়।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শেখ এহসান বলেন, সেন্টমার্টিনে জোয়ারের পানির আঘাতে বেশ কয়েকটি আবাসিক হোটেল ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। পাশাপাশি ঘরবাড়িও বিধ্বস্ত হয়েছে বলে শুনেছি। বিষয়টি আমরা দেখছি।