1. admin1@shimantoshohor.com : ডেস্ক নিউজ • : ডেস্ক নিউজ •
  2. nrakash261@gmail.com : সীমান্ত শহর ডেস্ক: : NR Akash
  3. admin@shimantoshohor.com : প্রকাশক : সীমান্ত শহর ডেস্ক: Islam
  4. alamcox808@gmail.com : ডেস্ক নিউজ : : ডেস্ক নিউজ :
শিরোনামঃ
উখিয়ার সাংবাদিক তানভীর শাহরিয়ারকে সাজানো মামলায় গ্রেপ্তারে মানববন্ধন বিএনপিতে যোগ দিলেন জামায়াতের দুই নেতা চকরিয়ায় অস্ত্রসহ আন্তজেলা ডাকাত দলের ৪ সদস্য গ্রেপ্তার বাংলাদেশে ঢুকছে ২ লাখ কোটি টাকা জাল নোট: পোস্টে জুলকারনাইন মাথা কেটে অপারেশনে দুই মাসের হাবিবার মৃত্যু, সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে উল্টো অভিযোগ চিকিৎসকের জামায়াত ক্ষমা না চাইলে ক্ষমতায় যেতে পারবে না: কাদের সিদ্দিকী এসএমপির নথি ফাঁস: বিব্রত পুলিশ, নেপথ্যে আ’লীগ দোসর মেধা তালিকায় নেই, বিশেষ সুবিধায় হলে থাকেন ছাত্রদল-শিবির-বাগছাসের ৪ চাকসু ও হল সংসদ প্রার্থী ক্যান্সার আক্রান্ত হেফাজত নেতা ফারুকীর পাশে দাঁড়ালেন বিএনপি নেতা কায়কোবাদ রেজুখাল চেকপোস্টে ইয়াবাসহ তিন পাচারকারী গ্রেফতার

আরাকান আর্মির দাপট কতদিনে ঠেকানো যাবে?

✍️ প্রতিবেদক: সাঈদ মুহাম্মদ আনোয়ার

  • আপডেট সময়ঃ মঙ্গলবার, ২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
  • ৪০ বার পঠিত

বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের পরিস্থিতি দিন দিন ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। নাফ নদী থেকে স্থলসীমান্ত—সব জায়গায় এখন নিয়ন্ত্রণ বিস্তার করেছে মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি। সশস্ত্র এ সংগঠনটি একদিকে মাদক ও অস্ত্র চোরাচালান চালাচ্ছে, অন্যদিকে বাংলাদেশের জেলেদের অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় করছে। একই সঙ্গে সীমান্ত দিয়ে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের নতুন রুটও তৈরি হয়েছে। সীমান্তে বাড়তি সতর্কতা সত্ত্বেও বিজিবি ও কোস্টগার্ডের জন্য পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

নাফ নদী ও সীমান্তে অপহরণ এখন নিয়মিত ঘটনায় পরিণত হয়েছে। শুধু আগস্ট মাসেই ৬৩ জন বাংলাদেশি জেলে ও ১০টি ট্রলার আরাকান আর্মির হাতে পড়েছে। ট্রলার মালিকদের হিসাবে গত ডিসেম্বর থেকে ২৬৭ জন জেলে অপহরণের শিকার হয়েছেন। যদিও এদের মধ্যে ১৮৯ জনকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে, বাকি এখনও নিখোঁজ। ২৬ আগস্ট নাইখংদিয়া থেকে ১১ জেলে ও দুটি ট্রলার ধরে নিয়ে যায় আরাকান আর্মি। ২৯ আগস্ট কোস্টগার্ড সীমান্ত অতিক্রম করার আগেই ১৯টি ট্রলারসহ ১২২ জেলেকে ফেরত আনতে সক্ষম হয়, যাদের মধ্যে ২৯ জন বাংলাদেশি ও ৯৩ জন রোহিঙ্গা ছিলেন।

স্থানীয় জেলেরা বলছেন, নাফ নদীতে এখন ভয়ে মাছ ধরা যায় না। টেকনাফের শাহপরী দ্বীপ ফেরিঘাট বোট মালিক সমিতির সভাপতি গফুর আলম অভিযোগ করেন, “আরাকান আর্মি স্পিডবোটে টহল দেয়। তারা ধাওয়া করে জেলে আর ট্রলার ধরে নিয়ে যায়। আগে আমাদের বন্দর থেকেই খাদ্য কিনত, এখন না পারায় মুক্তিপণ আদায় আর লাখ লাখ টাকার মাছ লুট করছে।”

কোস্টগার্ড সদর দপ্তরের গণমাধ্যম কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সিয়াম-উল-হক স্বীকার করেন, “রাখাইনে চলমান সংঘাতের কারণে সীমান্তের বড় অংশ এখন আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে। শূন্যরেখা অতিক্রম করলেই জেলেদের অপহরণের ঝুঁকি তৈরি হয়। এতে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ও মাদকপাচার রোধ করাও কঠিন হয়ে যাচ্ছে।”

মাদক ও অস্ত্র পাচার নিয়েও নতুন করে আতঙ্ক ছড়িয়েছে সীমান্তে। ২৭ আগস্ট টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের খরের দ্বীপ এলাকায় বিজিবির বিশেষ অভিযানে দুটি জি-৩, একটি এমএ-১, একটি এলএম-১৬ রাইফেল এবং বিপুল গুলি উদ্ধার করা হয়। এর আগে ১১ আগস্ট উখিয়ার বালুখালী সীমান্তে এক তরুণ একে-৪৭ রাইফেলসহ আত্মসমর্পণ করে, যাকে আরাকান আর্মির সদস্য হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।

বিজিবির ৬৪ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন বলেন, “অস্ত্রগুলো যেকোনো সন্ত্রাসী কার্যক্রম বা মাদক চোরাচালানের উদ্দেশ্যে মজুদ করা হয়েছিল। সীমান্তে ফোর্স বাড়ানো হয়েছে।”

অন্যদিকে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশও নতুন করে চাপে ফেলছে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীকে। স্থানীয় সূত্র বলছে, প্রায় ৫০ হাজার রোহিঙ্গা সীমান্তে অনুপ্রবেশের অপেক্ষায় আছে। রোহিঙ্গা নেতা মোহাম্মদ জোবায়ের অভিযোগ করেন, “আরাকান আর্মি একদিকে রোহিঙ্গাদের নির্যাতন করছে, আবার টাকার বিনিময়ে বাংলাদেশে প্রবেশের সুবিধা করে দিচ্ছে।” ফটো সাংবাদিক সেলিম খানও একই তথ্য দিয়ে বলেন, “যাদের টাকা আছে, তারা ঢুকতে পারছে। সীমান্তের ওপারের অবস্থা এতটাই খারাপ যে মানুষ জীবন বাঁচাতে মরিয়া।”

উখিয়ার পালংখালি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গফুর উদ্দিন চৌধুরী জানান, সীমান্তে প্রায়ই গুলির শব্দ শোনা যায়। কখনো কখনো তা বাংলাদেশের ভেতর পর্যন্ত আসে। “ওরা সীমান্ত পেরিয়ে ঢুকে পড়ে। আগে ইয়াবা পাচার করত জান্তা, এখন সেই নিয়ন্ত্রণও আরাকান আর্মির হাতে।”

সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে কক্সবাজার বিজিবি সেক্টর কমান্ডার কর্নেল মহিউদ্দিন আহমদ বলেন, “বাংলাদেশের ভূখণ্ডে কোনো সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালাতে দেওয়া হবে না। আহত কিছু রোহিঙ্গাকে মানবিক কারণে ঢুকতে দেওয়া হলেও সীমান্ত সুরক্ষায় আমরা সর্বোচ্চ আন্তরিকতা দেখাচ্ছি। মাদক ও অনুপ্রবেশ ঠেকাতে নজরদারি আরও বাড়ানো হয়েছে।”

বাংলাদেশে মিয়ানমারের সাবেক সামরিক অ্যাটাশে মেজর জেনারেল (অব.) মো. শহীদুল হক মনে করেন, রাখাইনে আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আরাকান আর্মি অস্ত্র ও অর্থ সংকটে পড়েছে। তাই “তারা মরিয়া হয়ে এখন মাদক পাচার বাড়াচ্ছে। বাংলাদেশকে এসব বিষয়ে আরো কঠোর হতে হবে।”

সীমান্তের শূন্যরেখা থেকে গোলাগুলির শব্দ প্রায় নিয়মিত শোনা যায়। এতে স্থানীয়রা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। মিয়ানমারের সামরিক জান্তা, আরাকান আর্মি এবং অন্যান্য সশস্ত্র গোষ্ঠীর সংঘর্ষের আগুন এখন বাংলাদেশ সীমান্ত ঘেঁষে ছড়িয়ে পড়ছে। ফলে কক্সবাজার সীমান্তে প্রতিদিনই বাড়ছে অস্থিরতা ও অনিশ্চয়তা।

পোষ্টটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো খবর
© 2025 Shimanto Shohor
Site Customized By NewsTech.Com