দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ ও উচ্চকক্ষে ১০০ আসনের বিষয়ে বিএনপি রাজি হলেও উচ্চকক্ষের আসন নির্বাচনে সংখ্যানুপাতিক (পিআর) পদ্ধতিতে রাজি নয়। দলটি মনে করে, উচ্চকক্ষে প্রতিনিধিত্ব নির্বাচন হওয়া উচিত নারী সংরক্ষিত আসনের মতো আসনভিত্তিক পদ্ধতিতে।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে দ্বিতীয় পর্বের ১৪তম দিনের আলোচনার পর সাংবাদিকদের এ কথা বলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, ‘যাঁরা উচ্চকক্ষে প্রতিনিধিত্ব করবেন তাঁদের নির্বাচনপদ্ধতির বিষয়ে আমরা বলেছি, সংবিধান অনুসারে বিদ্যমান সংরক্ষিত নারী আসন যেভাবে নির্বাচিত হয় আসনের ভিত্তিতে, সে অনুসারে নির্বাচনের কথা বলেছি।’
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদের বিষয়ে আমাদের দলসহ বেশির ভাগ রাজনৈতিক দল একমত। তবে এটির ঘটনপ্রক্রিয়া ও পাওয়ার অ্যান্ড ফাংশন কী হবে, সে বিষয়ে ব্যাপক বিতর্ক আছে।’ তিনি বলেন, বিএনপির ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাবে ইতিমধ্যে উচ্চকক্ষ গঠনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। বিএনপির মূল লক্ষ্য হচ্ছে সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রাখা বিশিষ্ট ব্যক্তিদের মেধা, প্রজ্ঞা ও অভিজ্ঞতাকে রাষ্ট্র পরিচালনায় যুক্ত করা। সেই উদ্দেশ্যে প্রতিনিধিত্বমূলক একটি উচ্চকক্ষ গঠনের প্রস্তাব রয়েছে তাঁর দলের।
তবে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদের প্রয়োজন আছে কি না, সে বিষয়ে অনেক দল প্রশ্ন তুলেছে বলেও জানান সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, বাংলাদেশের মতো আর্থিক অবস্থায় থাকা একটি দেশে আরেকটি ব্যয়বহুল নিম্নকক্ষের ‘রেপ্লিকা পার্লামেন্ট’ তৈরি করা কতটা দরকার, তা ভাবা উচিত।
সংবিধান সংশোধনের পদ্ধতি প্রসঙ্গে বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘সংবিধানের ১৪২ অনুচ্ছেদে যেসব মৌলিক ধারা রয়েছে—যেমন প্রস্তাবনা ৮, ৪৮, ৫৬ ও ১৪২ নম্বর ধারা—এসব ক্ষেত্রে সংশোধন এলেই তা পাস হওয়ার পর রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরের আগে গণভোটে দিতে হবে। এই ধারা অনুসারে আমরা প্রস্তাব দিয়েছি, ভবিষ্যতে কেউ যেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে না পারে, সে জন্য তা গণভোট ছাড়া পরিবর্তন করা যাবে না—এমন একটি বিধান সংযুক্ত করা হোক। কমিশন এই প্রস্তাব গ্রহণ করেছে।’
আলোচনায় বিএনপির পাশাপাশি অংশ নেয় জামায়াতে ইসলামী, এনসিপিসহ ৩০টি রাজনৈতিক দল।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজের সভাপতিত্বে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। সঞ্চালনায় ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার। উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সদস্য সফর রাজ হোসেন, বিচারপতি এমদাদুল হক, বদিউল আলম মজুমদার, ইফতেখারুজ্জামান ও মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া।