জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তারাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেছেন, দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে আজও অনিয়ম, দুর্নীতি, হুমকি ও অপকর্ম চলমান। এসব কারণে সাধারণ মানুষ আবারও রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর থেকে আস্থা হারাতে শুরু করেছে। যেই হোক চোর, বাটপার, চাঁদাবাজ বা হুমকিদাতা, আমরা তাদের নাম-পরিচয়সহ তালিকা প্রকাশ করব। আর বাংলাদেশের কোথাও শেখ হাসিনার মতো আর কাউকে একনায়ক হয়ে উঠতে দেওয়া হবে না।
শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) রাতে পঞ্চগড় সরকারি অডিটোরিয়ামে এনসিপির পঞ্চগড় জেলা শাখা আয়োজিত ‘বিচার, সংস্কার ও গণপরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন সংবিধান’ শীর্ষক কর্মশালা ও সমন্বয় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন তিনি।
সারজিস আলম অভিযোগ করে বলেন, পঞ্চগড়ের বিভিন্ন উপজেলা ও ইউনিয়নে এনসিপির নতুন কর্মীদের বিএনপি নেতাকর্মীরা হুমকি দিচ্ছেন। দেবীগঞ্জ উপজেলার শালডাঙ্গা ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান, বিএনপি সমর্থিত ফরিদুল ইসলাম সম্প্রতি এনসিপির প্রধান সমন্বয়কারীর বাড়িতে গিয়ে তাকে এবং তার বাবাকে প্রকাশ্যে হুমকি দিয়েছেন। বাংলাদেশের রাজনীতির স্থিতিশীলতার জন্য এটি ভয়ংকর দৃষ্টান্ত।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা ও তার ছাত্রলীগ যেটা করতে পারেনি, সেটি আজ বিএনপির ছাত্রদল শুরু করেছে—স্কুল পর্যায়ে কমিটি গঠন। আমরা স্পষ্ট করে বলছি, কোনো স্কুল-কলেজে রাজনীতির নামে নোংরা চর্চা ঢুকতে দেওয়া হবে না। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে কলুষিত করার যেকোনো প্রচেষ্টা আমরা প্রতিরোধ করব।
সারজিস আলম বলেন, আমাদের প্রতিপক্ষ কোনো রাজনৈতিক দল নয়। বিএনপি বা অন্য কোনো দল যদি ভালো কাজ করে, আমরা তাদের গলায় মালা পরিয়ে সম্মান জানাবো। তবে কোনো অপকর্ম হলে তা যে কোনো মূল্যে প্রতিরোধ করা হবে। যে অপকর্মে অতিষ্ঠ হয়ে জনগণ গণঅভ্যুত্থান ঘটিয়েছে, সেই ধরনের অপচেষ্টা সহ্য করা হবে না।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের প্রতিটি পরীক্ষা—প্রিলিমিনারি, রিটেন, ভাইভা— স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় হতে হবে এবং নিয়োগ মেধার ভিত্তিতে দিতে হবে। আমার নিজের পরিবারের কেউ যদি মেধার ভিত্তিতে টিকতে না পারে, তাহলে তার কোনো দরকার নেই। বহু বছর ধরে অযোগ্যরা সুপারিশের মাধ্যমে সিস্টেম দখল করেছে, এর ফলে দেশ ধ্বংস হয়েছে। আগামীতে একই অবস্থা হলে বাংলাদেশের পরিবর্তন আসবে না।
সারজিস আলম এনসিপি নেতাদের সতর্ক করে বলেন, কোনো সুপারিশ করবেন না, অন্য কারও সুপারিশও মেনে নেবেন না। সুপারিশের ভিত্তিতে কিছু হলে তা ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা কারও সঙ্গে অযথা বিরোধে যেতে চাই না। যে দল হাত বাড়াবে, আমরা তাদের সঙ্গে হাত মিলাব। তবে যদি কোনো পক্ষ পায়ে পাড়া দিয়ে ঝগড়া শুরু করে, তারা যদি ১০০ জন হয় আর আপনারা ১০ জন হন, তবুও ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। নইলে একদিন এই অন্যায়-অপরাধ থেকে শুরু গুম, খুন, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড শুরু হবে। এই সুযোগ দেওয়া যাবে না।