ময়মনসিংহের তারাকান্দায় ফকির হালিম উদ্দিন আকন্দের (৬৫) চুল ও দাড়ি জোরপূর্বক কেটে দেওয়ার ঘটনায় মজনু মিয়া (৪৭) নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ময়মনসিংহ নগরী থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার মজনু মিয়া উপজেলার কাশিগঞ্জ এলাকার মৃত রজব তালুকদারের ছেলে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তারাকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) টিপু সুলতান। তিনি জানান, গ্রেপ্তার মজনু মিয়া এ মামলার এজাহারনামীয় আসামি।
এর আগে গত শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বিকেল পৌনে ৩টার দিকে ভুক্তভোগীর ছেলে মো. শহীদ আকন্দ বাদী হয়ে তারাকান্দা থানায় মামলা দায়ের করেন।
ভুক্তভোগী হালিম উদ্দিন আকন্দ বলেন, “ঘটনার দিন বাজারে গেলে তারা আমাকে ধরে জোর করে চুল ও দাড়ি কেটে দেয়। আমি চেষ্টা করেও তাদের হাত থেকে রক্ষা পাইনি। তখন আমি শুধু আল্লাহর কাছে বিচার চেয়েছি। এখন পরিবার বলায় থানায় অভিযোগ করেছি। দেখি তারা কী বিচার করে।”
তিনি আরও জানান, চুল-দাড়ি কাটার সময় সেখানে এলাকার কয়েকজন লোকসহ ৮-৯ জন উপস্থিত ছিল। এর মধ্যে নয়ন ও মজনুর নাম উল্লেখ করেন তিনি। হালিম উদ্দিনের অভিযোগ, ঘটনার পরও আসামিরা এলাকায় ঘুরে তাকে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, হালিম উদ্দিন আকন্দ তারাকান্দা উপজেলার কোদালিয়া গ্রামের বাসিন্দা। সবাই তাকে ‘হালিম ফকির’ নামে চিনে। প্রায় ৩৭ বছর আগে হজরত শাহজালাল (র.) ও শাহ্ পরানের (র.) মাজারে গিয়েই তার জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আসে। সেই থেকে তিনি চুল-দাড়ি কাটা বন্ধ করে দেন। টুকটাক কবিরাজি করেই জীবিকা নির্বাহ করতেন।
প্রতিবেশীরা জানান, হালিম উদ্দিন কোনো অপ্রকৃতিস্থ নন। সংসার জীবনে তিনি স্ত্রী, ছেলে ও মেয়ে নিয়ে স্বাভাবিক জীবনযাপন করতেন। এলাকায় তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগও ছিল না। হেনস্তার পর থেকে তিনি চরম মানসিক আঘাতে ভুগছেন।
এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক নিন্দার ঝড় ওঠে। বিশেষ করে চুল কাটার সময় অসহায় হালিম উদ্দিনের মুখ থেকে বের হওয়া বাক্য, “আল্লাহ, তুই দেহিস”, এখন নেটিজেনদের প্রতিবাদের ভাষায় পরিণত হয়েছে।