1. admin1@shimantoshohor.com : নিজস্ব প্রতিবেদক: : নিজস্ব প্রতিবেদক:
  2. nrakash261@gmail.com : সীমান্ত শহর ডেস্ক: : NR Akash
  3. admin@shimantoshohor.com : প্রকাশক : সীমান্ত শহর ডেস্ক: Islam
  4. alamcox808@gmail.com : বিশেষ প্রতিবেদক : Badioul Alam বিশেষ প্রতিবেদক
শিরোনামঃ
বঙ্গোপসাগরের নাইক্ষ্যংদিয়া উপকূলে বড়শি দিয়ে মাছ ধরার সময় ৫ জেলে আটক টুঙ্গিপাড়ায় আওয়ামী লীগ ও কৃষক লীগের দুই নেতার পদত্যাগ মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের গ্র্যাজুয়েট প্লাস ভিসা চালুর সম্ভাবনা ভারত থেকে হু হু করে পানি ঢুকছে বাংলাদেশে, প্লাবিত হতে পারে ৫ জেলা প্রধান উপদেষ্টাকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি দিলো ইউকেএম ডিজিএফআইয়ের হেডকোয়ার্টার ভেঙে দেওয়ার হুঁশিয়ারি নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর আগামী নির্বাচনে ভোটার সংখ্যা হতে পারে ১২ কোটি ৭৮ লাখ ৭৩ হাজার ৭৫২ হিরো আলমের জানাজা কাল বিকেল ৫টায় পুলিশের এডিসিকে ছুরি মেরে পালিয়ে গেল ছিনতাইকারী এনসিপির পরিচয়ে বেপরোয়া সম্রাট

পুলিশের গুলিতে পড়ে যান দেয়ালের ওপর থেকে, ৬ টুকরো হয়ে যায় উরুর হাড়

✍️ প্রতিবেদক: সীমান্ত শহর ডেস্ক:

  • আপডেট সময়ঃ বৃহস্পতিবার, ২৪ জুলাই, ২০২৫
  • ৮ বার পঠিত

বাবা মারা যাওয়ার কয়েক বছর পর পরিবারের হাল ধরতে গ্রাম থেকে শহরে আসেন মোহাম্মদ জহির খান। পড়াশোনার পাশাপাশি বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। পরিবারের মুখে হাসি ফুটাতে দেশ থেকে বিদেশে যাওয়ার জন্য সকল প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। এরমধ্যে শুরু হয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। প্রতিদিন শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের ওপর পুলিশ ও সরকার দলীয় মানুষের হামলার নির্যাতনের ভিডিও দেখে সহ্য না করতে পেরে নিজেই সবার সাথে আন্দোলনে যোগ দেন ১৮ জুলাই। আন্দোলনে অংশ নিয়ে অনেকবার টিয়ার গ্যাস ও রাবার বুলেটে আহত হয়ে বাসায় ফিরেন। পরিবারের সদস্যরা অনেকবার আন্দোলনে না যাওয়ার জন্য বুঝালেও, তাতে তিনি খুব একটা সাড়া দেননি। কিন্তু ১৪ দিনের মাথায় ২ আগস্ট পুলিশের ধাওয়া খেয়ে দেয়াল টপকানোর চেষ্টাকালে পুলিশের ছোড়াগুলিতে দেয়ালের অনেক উপর থেকে পড়ে গিয়ে ভেঙে যায় দু’পায়ের গোড়ালি। শুধু পায়ের গোড়ালি ভাঙেনি প্রায় ছয় টুকরো হয়ে যায় উরুর উপরের হাড়। বর্তমানে হাঁটাচলার করতে হয় স্ক্যাচে ভর দিয়ে।

মোহাম্মদ জহির খান সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার উত্তর দুবাগ এলাকার মৃত ডা.শায়েস্তা খান ও ছালেহা বেগম দম্পতির দ্বিতীয় পুত্র। সেখানে মা আর ছোট তিন ভাইকে নিয়ে থাকতেন। তার বাবা ডা.শায়েস্তা খান ২০১০ সালে মৃত্যুবরণ করেন। তার কয়েক বছর পরেই পরিবারের হাল ধরতে চলেন আসেন সিলেট শহরে। থাকতেন নগরীর আম্বরখানা এলাকার একটি বাসায়। পড়াশোনা আর কাজ নিয়ে বেশ ব্যস্ত দিন যাচ্ছিল জহিরের।
২০২৪ সালের ২ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের চলাকালে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের পুলিশ বাহিনীর গুলিতে গুরুতর আহত হন তিনি। মধ্যে আয়ের পরিবারে বেড়ে ওঠা ৩০ বছর বয়সী জহির সংসারে হাল ধরার চেষ্টা করছিলেন। পরিবারের মানুষের মুখে হাসি ফুটাতে ও উন্নত শিক্ষা অর্জনের জন্য আইএলটিএস পরীক্ষা দিয়ে প্রবাসে পাড়ি দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। কিন্তু দেশমাতৃকার টানে সেই সুযোগ ছেড়ে দিয়ে ‌১৮ জুলাই থেকে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে রাজপথে নেমে পড়েন তিনি। জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের এক বছর হলেও এখনো সুস্থ হয়ে উঠেননি জহির খান। আন্দোলনে আহত হওয়া ব্যক্তিদের সরকার থেকে বিভিন্ন সহায়তার আশ্বাস দেয়া হলেও সেগুলোর বাস্তবায়নে নেই। তাই বুকে অনেকটা চাপা কষ্ট নিয়ে আছেন জহির।

আন্দোলনে আহত জহির খান বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘প্রতিদিন বাইরে যাওয়া-আসার সময় আন্দোলনের উত্তাপ দেখতাম। ফোনে নিরীহ শিক্ষার্থী, সাধারণ জনগণের উপর হামলার ভিডিও, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া দেখতাম। এভাবে আর বসে থাকা যায় না, ১৮ জুলাই থেকে আমিও আন্দোলনের সাথে যোগ দিতে শুরু করলাম। ২ আগস্ট ছিল শুক্রবার, জুম্মার নামাজের পর শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় পৌঁছামাত্র পুলিশী বাঁধার মুখে পড়ি। আমরা সেদিন নায্য দাবি নিয়ে শান্তিপূর্ণ মিছিল নিয়ে মাউন্ট এডোরা হাসপাতালের সামনে আসতেই পেছন থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আমাদের লক্ষ্য করে টিয়ারশেল, সাউন্ড গ্রেনেড ও গুলি শুরু করে। আকস্মিক এই গুলি ও ঝাঁঝালো টিয়ারশেলের গ্যাস থেকে বাঁচতে দৌঁড়ে মাউন্ট এডোরা হাসপাতালের বাইরের গ্যারেজের দিকে আশ্রয় নেই। সেখানেও গিয়ে হানা দেয় পুলিশ। উপায়ন্তর না দেখে দেয়াল টপকানোর জন্য লাফ দেওয়ার প্রস্তুতি নেই। কিন্তু তার আগেই ছুটে আসা বুলেটের আঘাতে পড়ে যাই দেয়ালের অনেক উপর থেকে। সাথে সাথেই ভেঙে যায় দু’পায়ের গোড়ালি ও প্রায় ছয় টুকরো হয়ে যায় উরুর উপরের হাড়।
তিনি বলেন, ঘটনার আকস্মিকতায় কিছু বুঝে উঠতে না পেরে কোনোমতে ডাক দেই দৌঁড়ে থাকা সহযোদ্ধাদের। সেখান থেকে শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষের সহযোগিতায় তড়িঘড়ি করে নিয়ে যাওয়া হয় গলির ভেতরের এক বাসায়। প্রচন্ড আঘাত আর ব্যথায় কাতরাতে থাকলেও বাইরে গুলাগুলির জন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হচ্ছিল না। প্রায় ঘন্টাখানেক পর ওই এলাকার একজন মহিলা ও দুই ভাইয়ের সহযোগিতায় ওসমানী মেডিকেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। রাস্তায় বিভিন্ন পয়েন্টে আন্দোলনকারী কি না এমন তল্লাশি পেরিয়েও আসতে হয়। তখন ওই মহিলা ভয়ে পুলিশকে বলেন, আমার ছেলে ভবনে কাজ করতে গিয়ে পড়ে গেছে, তাই হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছি। এমন মিথ্যার আশ্রয় না নিলে সেদিন আর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হতো না। কিন্তু হাসপাতালে আসা মাত্রই বাধে বড় বিপত্তি! আন্দোলনকারী শনাক্তে জরুরি বিভাগজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে গ্রেফতার আতঙ্ক। উপায়ন্তর না দেখে পরিবারের সদস্যরা নিয়ে যান একটি প্রাইভেট হাসপাতালে। সেদিন রাতেই ঝুঁকিপূর্ণ বড় সার্জারির দুই দিন পর ধীরে ধীরে জ্ঞান ফিরে আসে।

পোষ্টটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো খবর
© 2025 Shimanto Shohor
Site Customized By NewsTech.Com