‘আমার মেয়েটা মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে একাদশ শ্রেণিতে পড়ে। সোমবার (২১ জুলাই) দুপুর ১টায় ওর ক্লাস ছুটি হয়। তখন তার এক সহপাঠীকে নিয়ে ক্লাস থেকে বের হয়। হেঁটে কলেজ ক্যাম্পাসের দ্বিতীয়-তৃতীয় শ্রেণির সামনে দিয়ে প্রধান ফটকের দিকে যাচ্ছিল। এর মধ্যে হঠাৎ তাদের সামনে (৫০ ফুট দূরে) বিমানবাহিনীর যুদ্ধবিমানটা আছড়ে পড়ে।’
‘মুহূর্তেই দ্বিতীয় তৃতীয় শ্রেণির ক্লাসে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। আগুনের মধ্যে বাচ্চাগুলো দিগ্বিদিক ছুটতে থাকে। এমন দৃশ্য দেখে মেয়ে আমাকে কল দেয়। তখন অফিস থেকে ক্যাম্পাসে ছুটে যাই। আর আমি ক্যাম্পাসে গিয়ে যা দেখেছি, তা বর্ণনা করার মতো নয়।’বুধবার (২৩ জুলাই) সকালে উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে জাগো নিউজকে এভাবেই ভয়াবহ সেই দুর্ঘটনার কথা বর্ণনা করেন উত্তরা-৬ নম্বর সেক্টরের বাসিন্দা রিয়াদ মোর্শেদ। তার মেয়ের নাম রুয়াইদা আক্তার। তার তৃতীয় শ্রেণি পড়ুয়া ছেলেটারও এই স্কুলে ভর্তি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এবার তাকে এ স্কুলে ভর্তি করাননি। আল্লাহ তার ছেলেকে বাঁচিয়েছে বলে জানান তিনি।
রিয়াদ মোর্শেদ বলেন, ‘ওই ঘটনার পর আমার মেয়েটা ট্রামায় আছে। মেয়েটা ওইদিন সামান্য আহত হয়েছে। এখন সে বাসায় বিশ্রাম নিচ্ছে। আর আমি মানসিকভাবে অসুস্থ। ওই ঘটনায় আমার বন্ধুর ছেলে-মেয়েও মারা গেছে। এর মধ্যে একজন ক্লাস থ্রি ও একজন ফোরে পড়তো।’
তিনি বলেন, ‘ওইদিন ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি, স্কুল ভবন থেকে বের হওয়ার একটিই পথ। সেখানেই বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। ফলে তাদের বের হওয়ার আর রাস্তা ছিল না। অথচ ওপেন ডোর এক্সিট পয়েন্টগুলো যদি থাকতো তাহলে অনেক বাচ্চা বেঁচে যেতো।’
দেশের সব স্কুল-কলেজ-মাদারাসায় এক্সিট গেট রাখার দাবি জানিয়ে রিয়াদ মোর্শেদ বলেন, ‘আমি একটি মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে চাকরি করি। এক্সিট দরজা নিয়ে আমার খুব ভালো ধারণা আছে। কিন্তু ওই স্কুল ভবনের কোথাও এক্সিট পয়েন্ট নেই। অথচ যে কোনো ভবনে এক্সিট পয়েন্ট খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এখানে যদি আরও দুইটা দরজা থাকতো তাহলে বাচ্চারা কিন্তু খুব সহজে বের হয়ে আসতে পারতো। এগুলো আমাদের দেশে নেই, এগুলা কেউ দেখে না।’