সরকারি গুদামে খাদ্যশস্যের মজুত এ যাবতকালের সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। সাড়ে ২০ লাখ টনের বেশি ধান-চাল ও গমের মজুতকে রেকর্ড বলছেন সংশ্লিষ্টরা। একই সঙ্গে চলতি বোরো মৌসুমে ধান ও চালের সর্বোচ্চ সংগ্রহের পথে সরকার।
এবার বোরোতে ধান-চালের সংগ্রহ ১৫ লাখ টন ছাড়িয়ে যেতে পারে। এ ফসলে এর আগে এত পরিমাণ সংগ্রহ সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছেন খাদ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।
খাদ্য অধিদপ্তরের সবশেষ (২৭ জুলাই) তথ্য অনুযায়ী, সরকারি গুদামে মোট খাদ্যশস্যের মজুত ছিল ২০ লাখ ৫৪ হাজার ১৭৯ টন। এর মধ্যে ১৭ লাখ ৯৫ হাজার ৯৬ টন চাল, এক লাখ ২৪ হাজার ১৪৬ টন ধান ও এক লাখ ৭৮ হাজার ৩৮৮ টন গম।
এর আগে ২০২২ সালের জানুয়ারিতে সরকারি খাদ্যশস্যের মজুত ১৯ লাখ ৮৫ হাজার টন হয়েছিল। এটিই ছিল এ যাবতকালের সর্বোচ্চ মজুত বলে জানান খাদ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। গত বছরের এ সময়ে মজুতের পরিমাণ ছিল ১৬ লাখ টনের মতো।
বোরো সংগ্রহ চলমান থাকায় মজুত আরও বাড়বে। তবে মজুত আর খুব বেশি বাড়ার সম্ভাবনা নেই, কারণ সরকারি গুদামের খাদ্যশস্য ধারণের সক্ষমতা সাড়ে ২২ লাখ টনের মতো বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।
সংশ্লিষ্টরা জানান, বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকার তার মজুত ব্যবহার করে। খোলাবাজারে বিক্রি (ওএমএস), খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিসহ বিভিন্ন সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির মাধ্যমে খাদ্যশস্য বিতরণ করে সরকার বাজার নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। সরকারের হাতে যত বেশি মজুত থাকবে সরকার তত বেশি সফলভাবে বাজারে প্রভাব বিস্তার করতে পারবে।
আর অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে ধান, চাল ও গম সংগ্রহ এবং বিদেশ থেকে আমদানির মাধ্যমে সরকার তার মজুত গড়ে তোলে। অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে সংগ্রহের সবচেয়ে বড় অংশটি হয় বোরো মৌসুমে।
এছাড়া সরকারের বোরো সংগ্রহ কর্মসূচি চলমান। বোরো ধান, চাল কেনা চলবে আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত। অন্য বছর বারবার সময় বাড়িয়েও যেখানে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয় না, এবার সেখানে এক মাস বাকি থাকতেই লক্ষ্যমাত্রা পূরণের কাছাকাছি চলে এসেছে সরকার। খাদ্য অধিদপ্তরের ২৭ জুলাইয়ের তথ্য অনুযায়ী, বোরোতে মোট ১৪ লাখ ২৮ হাজার ১৫১ টন ধান, সিদ্ধ ও আতপ চাল সংগ্রহ করা হয়েছে। এর মধ্যে ধান ৩ লাখ ৭৬ হাজার ৯৯২ টন, সিদ্ধ চাল ১১ লাখ ৪৭ হাজার ৬৮৪ ও আতপ চাল ৩৫ হাজার ৪৫৪ টন।
সরকার অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে চাহিদা অনুযায়ী ধান-চাল কিনতে পারলে আমদানিনির্ভরতা অনেকটাই কমে যায়। এতে বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয় হয় বলে জানান কর্মকর্তারা।
বাজারে এই মুহূর্তে চালের দাম কিছুটা বেড়ে স্থির হয়ে আছে। আগস্টের মাঝামাঝি চালু হচ্ছে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি। এরপর চালের দাম কমতির দিকে যাবে বলে আশা করছেন খাদ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।