ঘড়ির কাঁটার মতো বছর ঘুরে ফের এলো আগস্ট মাস। বছর ঘুরলেও পরিবর্তন হয়নি পরিস্থিতির। এখনো সেই চব্বিশের মতোই উত্তাল পরিস্থিতি। এখনো বয়ে বেড়ানো লাগছে ১৬ বছরের জমে থাকা ক্ষোভ। এখনো স্লোগান দিতে হচ্ছে, আমার ভাই মরলো কেন, অমুক তমুক জবাব চাই।
চব্বিশের স্বপ্ন নিয়ে এখনো কেউ রাজপথে। আশায় পথ চেয়ে আছে। আবার কেউ হতাশ হয়ে ঘরে ফিরেছে। কিন্তু শিশু-কিশোর ও তরুণদের কাঁচা হাতে অব্যক্ত কথাগুলো দেওয়ালে রয়ে গেছে। এখনো কথা বলে নীরব দেওয়াল।
এক বছর আগে ২০২৪ সালের জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে নেমে এসছিল সব স্তরের মানুষ। কচি-কাঁচার মেলার সাথী থেকে বয়োবৃদ্ধ নেমেছিল রাজপথে। শেখ হাসিনার টানা চার মেয়াদের শাসনের অবসান হয়েছে। সেই উত্তাল আন্দোলনে সবার স্বপ্ন ছিল, আশা-আকাঙ্ক্ষা ছিল। কেউ বলেছে, কেউ বলেনি। চুপ করেই ফিরেছে। তবে, কচি হাতে কিছু শিক্ষার্থী সারাদেশের দেওয়ালে তাদের প্রত্যাশাগুলো জানিয়ে গেছে। যেগুলো বই আকারে দেশ-বিদেশে প্রচারও করা হয়েছে।
বছর ঘুরে প্রশ্ন এসেছে, দেওয়ালের সেই প্রত্যাশাগুলো কি পূরণ হয়েছে? গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশ বিনির্মাণে অগ্রগতি আছে? সবাই বলছে, দেওয়ালের লেখাগুলো পায়নি পূর্ণতা। তবে লিখতে পারা বা বলতে পারার স্বাধীনতাটুকু পেয়েও অনেকেই তৃপ্ত।
রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশের বিভিন্ন দেওয়ালে এখনো শোভা পায় অসাধারণ দেওয়াল লিখন, গ্রাফিতি ও ইসলামিক ক্যালিওগ্রাফি। এর মধ্যে আছে, ‘দেশ সংস্কার চলছে; শিক্ষা, নিরাপত্তা, বাকস্বাধীনতা, গণতন্ত্র, আইন, একতা, দুর্নীতিমুক্ত’, ‘আমি ৫২-তে জেগেছিলাম ফিরিয়ে এনে ছিলাম ভাষা, ২৪ শে জেগেছি আবারও কবর দিয়েছি কোটা’, ‘অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ’, ‘ফ্রিডম অব স্পিচ’, ‘আমরা সবাই এক, স্বাধীন’, ‘ঘুষ দেব না ঘুষ নেব না, এই হোক আমাদের অঙ্গিকার’, ‘স্বাধীনতা এনেছি সংস্কারও আনবো’, ‘হোক লড়াই আরেকবার, ধ্বংস হোক স্বৈরাচার’, ‘আসছে ফাগুন, আমরা হবো দ্বিগুণ’, ‘বিকল্প কে? তুমি আমি আমরা! ৫ আগস্ট নতুন স্বাধীনতা দিবস’, ‘মুক্তির মন্দির সোপানতলে কত প্রাণ হলো বলিদান’, ‘যদি থাকি একত্র, ন্যায়বিচার সর্বত্র!!’, ‘বুকের মধ্যে তুমুল ঝড়, বুক পেতেছি গুলি কর’, ‘আঙ্কেল একটু গেইটটা খুলেন, প্লিজ!’, ‘দুর্নীতি তুমি সরে দাঁড়াও, ন্যায় মাথা তুলবে’, ‘আমরা কয়েকগুণ হয়েছি, স্যার!’, ‘৫২ দেখিনি, ৭১ দেখিনি, ২৪ দেখেছি’, ‘কত বিপ্লবী বন্ধুর রক্তের বিনিময়ে স্বাধীনতা মিলেছে’, ‘অর্জন তো করেছি, এবার রক্ষার পালা’, ‘দেশটা কারো বাপের না’, ‘আমরা হারবো না’ এবং ‘আমরা নতুন দেশ গড়বো’