ময়মনসিংহের ভালুকা পৌর শহরের বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম। ৪০ হাজার টাকা ধার করে জেলে থাকা ছোট ভাই নজরুল ইসলামকে ছাড়িয়ে আনেন তিনি। এর কিছুদিন পরে পারিবারিক কলহের জেরে সেই রফিকুলের স্ত্রী ও দুই ছেলেমেয়েকে গলাকেটে হত্যা করে পালান নজরুল। এ ঘটনা গত ১৪ জুলাইয়ের।
সাইকেল কেনার টাকার জন্য খালার বাসায় যায় ১৪ বছরের কিশোর গোলাম রব্বানী খান ওরফে তাজ। খালার অগোচরে তিন হাজার টাকা চুরির সময় ধরা পড়ে সে। মাকে বলে দিতে চাওয়ায় টেবিলে রাখা ছুরি দিয়ে প্রথমে বড় খালাকে, পরে সেজো খালাকেও ছুরিকাঘাত করে। গত ৯ মে রাজধানীর শেওড়াপাড়ায় দুই খালাকেই হত্যা নিশ্চিত করে পালিয়ে যায় ১৪ বছরের এ কিশোর।
২৮ মে ঢাকার মিরপুরে পরকীয়া প্রেমিকের হাতে খুন হন স্বামী ও স্ত্রী। মিরপুরের একটি বাড়িতে নাজমুল হাসান পাপ্পু ও দোলনা আক্তার দোলাকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে গাউস মিয়া নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে। পুলিশ জানায়, নিহত দোলা তার স্বামী পাপ্পুর সঙ্গে মিরপুরের ওই বাড়িতে সাবলেট হিসেবে ভাড়া থাকতেন। কিছুদিন আগে গাউস মিয়া প্রবাস জীবন শেষ করে দেশে এসে দোলার সঙ্গে পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়েন। পরে বিয়ে নিয়ে দোলার সঙ্গে মনোমালিন্য হলে দোলা ও তার স্বামীকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেন গাউস।
সামাজিক ও পারিবারিক দ্বন্দ্ব-কলহের কারণে অবলীলায় এভাবে খুন হচ্ছে মানুষ। অধিকাংশই ঘটনাই ঘটছে শিক্ষিত পরিবারে। বাবা-মায়ের হাতে সন্তান, সন্তানের হাতে বাবা-মা, পরকীয়ার কারণে স্বামীর হাতে স্ত্রী, স্ত্রীর হাতে স্বামী, সম্পত্তির জেরে এক ভাই আরেক ভাইকে হত্যা করছে। প্রায় প্রতিটি ঘটনাই তুচ্ছ কোনো কারণে ঘটছে। একটি ঘটনার নৃশংসতা ছাড়িয়ে যাচ্ছে আরেকটিকে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটা শুধু আইনশৃঙ্খলার অবনতির দৃষ্টান্ত নয়, দেশে আইনের শাসনের ঘাটতি ও সামাজিক অসুস্থতারও লক্ষণ।