রাজধানীসহ সারাদেশে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে বিপুলসংখ্যক মধ্যম ও স্বল্পগতির অননুমোদিত, ঝুঁকিপূর্ণ বৈদ্যুতিক থ্রি-হুইলার (ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা বা ইজিবাইক)। মহাসড়কে নিয়ন্ত্রণহীন এসব যান চলাচলে বিশৃঙ্খলা তৈরি হচ্ছে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায়।
ঢাকাসহ দেশের প্রধান সড়ক থেকে এসব বাহন কয়েক দফা তুলে দেওয়ার চেষ্টা করেও আন্দোলনের মুখে ব্যর্থ হয়েছে সরকার। বৈদ্যুতিক থ্রি-হুইলারগুলোর জন্য কোনো আইন, নীতিমালা বা বিধি-বিধানও নেই। কোনো সঠিক পরিসংখ্যান না থাকলেও ধারণা করা হয়, সারাদেশে ৫০ লাখেরও বেশি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা বা ইজিবাইক রয়েছে। এর মধ্যে ঢাকায়ই রয়েছে ৮ থেকে ১০ লাখ।
খসড়া নীতিমালা অনুযায়ী, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) কাছ থেকে ব্যাটারিচালিত রিকশার নিবন্ধন ও চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্স বাধ্যতামূলকভাবে নিতে হবে। কোন এলাকার কত সংখ্যক অটোরিকশা নিবন্ধন পাবে বা চলাচল করবে, সেই সীমা নির্ধারণ করবে সড়ক পরিবহন আইন অনুযায়ী গঠন করা যাত্রী ও পণ্য পরিবহন কমিটি।
থ্রি-হুইলার বা অটোরিকশাগুলো শৃঙ্খলার মধ্যে আনতে অনেকদিন থেকেই বিভিন্ন পর্যায় থেকে একটি নীতিমালা করার দাবি ছিল। আমরা একটি নীতিমালার খসড়া করেছি। বাস্তবতার নিরিখেই খসড়াটি করা হয়েছে। এখন সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের মতামত নিয়ে এটি চূড়ান্ত করার প্রক্রিয়া চলছে। নীতিমালাটি হলে ব্যাটারিচালিত রিকশার যে বিশৃঙ্খলা তা কেটে যাবে বলে মনে করি।- অতিরিক্ত সচিব নিখিল কুমার দাস
কোনো ব্যক্তি মধ্যমগতির তিনটি ও ধীরগতির পাঁচটির বেশি অটোরিকশার মালিক হতে পারবেন না। এ যান কোথায় চলাচল করতে পারবে কোথায় পারবে না সেটাও নীতিমালায় উল্লেখ করা হয়েছে।
এছাড়া নীতিমালা অনুযায়ী এজাতীয় মোটরযানকে ফিটনেস সনদ নিতে হবে। অটোরিকশাচালকরা প্রশিক্ষণের আওতায় আসবেন।
এ বিষয়ে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (আরবান ট্রান্সপোর্ট অনুবিভাগ) নিখিল কুমার দাস জাগো নিউজকে বলেন, ‘থ্রি-হুইলার বা অটোরিকশাগুলো শৃঙ্খলার মধ্যে আনতে অনেকদিন থেকেই বিভিন্ন পর্যায় থেকে একটি নীতিমালা করার দাবি ছিল। আমরা একটি নীতিমালার খসড়া করেছি। বাস্তবতার নিরিখেই খসড়াটি করা হয়েছে। এখন সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের মতামত নিয়ে এটি চূড়ান্ত করার প্রক্রিয়া চলছে। নীতিমালাটি হলে ব্যাটারিচালিত রিকশার যে বিশৃঙ্খলা তা কেটে যাবে বলে মনে করি।’
সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সহকারী সচিব জাগো নিউজকে বলেন, ‘খসড়াটি বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে মতামত চাওয়া হয়েছিল। আমরা সেভাবে মতামত পাইনি। আরেকটি তাগিদপত্র দেওয়া হয়েছে, এক সপ্তাহের মধ্যে মতামত জানানোর জন্য। মতামত পেলে আমরা আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা ডাকবো। সেখানেই মূলত নীতিমালাটি চূড়ান্ত হবে। এরপর তা গেজেট আকারে প্রকাশিত হবে।’
নীতিমালার প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, স্বল্প নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতাসম্পন্ন, ধীরগতির বৈদ্যুতিক থ্রি-হুইলার দ্রুতগতিসম্পন্ন মোটরযানের সঙ্গে একই মহাসড়কে চলাচলের সময় গতির পার্থক্যের কারণে প্রায়ই সড়কে দুর্ঘটনা ঘটছে। অন্যদিকে সড়কের ধারণক্ষমতার তুলনায় বেশি সংখ্যক বৈদ্যুতিক থ্রি-হুইলার চলাচল করায় অসহনীয় যানজট সৃষ্টি হচ্ছে, যা ভ্রমণ সময় ও বিদ্যুতের অপচয় বাড়াচ্ছে।