ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণে অনিয়মের অভিযোগ জানিয়েছেন ৯ জন পোলিং এজেন্ট। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে তাঁরা যৌথভাবে লিখিত অভিযোগ জানান। তাঁরা অনিয়মের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব অংশীজনের অংশগ্রহণে কমিটি গঠনসহ কয়েকটি দাবি জানিয়েছেন।
লিখিত অভিযোগে বলা হয়, গত মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণের সময় প্রার্থী, ভোটার ও পোলিং এজেন্টরা অসংখ্য অনিয়ম প্রত্যক্ষ করেছেন। এসব অভিযোগের মধ্যে ভোটকেন্দ্রে আগে থেকেই পূরণ করা ব্যালট পেপার ও জাল ভোটারের উপস্থিতি, পোলিং এজেন্টদের দায়িত্ব পালনে বাধাদান অন্যতম। নির্বাচনী কালি হিসেবে ভোটারদের আঙুলে যে কালি ব্যবহার করা হয়েছে, তা কোনোভাবেই অমোচনীয় ছিল না। এই কালি সামান্য ঘষাতেই উঠে যাচ্ছিল। এমনকি নির্বাচনের দিন জামায়াতে ইসলামীর সংসদ সদস্য পদপ্রার্থীর মতো অসংখ্য মানুষ অবৈধভাবে ভুয়া প্রেস-পাস ব্যবহারসহ নানা উপায়ে ক্যাম্পাসে অবস্থান করে নির্বাচন প্রভাবিত করেছেন।
ভোটার উপস্থিতির যে সংখ্যা নির্বাচন কমিশন উল্লেখ করছে, তা নিয়ে ব্যাপক সংশয় সৃষ্টি হয়েছে উল্লেখ করে অভিযোগপত্রে বলা হয়, এত বিপুলসংখ্যক ভোটার যদি ভোট দিয়ে থাকেন, তাহলে আধা বেলার পর ভোটকেন্দ্র কীভাবে ফাঁকা পড়ে ছিল—এই প্রশ্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সব অংশীজনের পক্ষ থেকে উঠেছে।
ভোট গ্রহণ শেষ হওয়ার পর ভোট গণনার সময়ও অনেক ধরনের অনিয়ম পোলিং এজেন্টরা প্রত্যক্ষ করেছেন। এসবের মধ্যে ভোট গণনা শুরু করতে গড়িমসি, নির্দিষ্ট প্যানেলের প্রার্থীদের অবৈধভাবে গণনার স্থলে অবস্থান, গণনার মেশিন ও প্রোগ্রাম সম্পর্কিত ধোঁয়াশা, গণনার সময় পোলিং এজেন্টদের মেশিন থেকে দূরে রাখা উল্লেখযোগ্য। এসব তাঁদের মনে নানা আশঙ্কার জন্ম দিয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে অভিযোগকারী পোলিং এজেন্টরা অনিয়ম খতিয়ে দেখতে সব অংশীজনের অংশগ্রহণে কমিটি গঠনসহ বেশ কয়েকটি দাবি জানায়। এর মধ্যে রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও সাংবাদিকদের প্রতি প্রমাণাদি জমা দেওয়ার আহ্বান; অনতিবিলম্বে ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে ভোট পুনর্গণনা; ভোটার উপস্থিতির প্রকৃত তথ্য বের করার নিমিত্তে অংশগ্রহণকারী ভোটারদের তালিকা প্রকাশ; ভোট গণনার মেশিন ও প্রোগ্রাম কোন প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে, কী প্রক্রিয়ায় নেওয়া হয়েছে এবং কারা সংশ্লিষ্ট ছিল, তা স্পষ্ট করা।
অভিযোগ দেওয়া পোলিং এজেন্টদের মধ্যে রয়েছেন জাইবা তাহজীব, বৈশাখী সুলতানা রিথী, সামিরা রহমান, ইসরাত জাহান, শাহানা মমিন রাইসা, জাহরা নাজিফা, সামিহা হায়দার কথা, মো. মুসফিকুর রহমান ও রাজ ধর প্রীতম।