কুমিল্লার মুরাদনগরে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদের অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষের সময় সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। তবে সংঘর্ষের ঘটনায় কোনো পক্ষ থানায় মামলা করেনি।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে খোলা কাগজের জেলা প্রতিনিধি মো. শাহে ইমরান চারজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ১০ থেকে ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলাটি করেন। মামলার বাদী শাহে ইমরান কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার বাসিন্দা।
মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, মামলায় শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি।
মামলার এজাহারনামীয় আসামিরা হলেন উপজেলার রহিমপুর উত্তরপাড়া এলাকার মো. শুকুর আলী, খামারগ্রাম গ্রামের আশিকুল ইসলাম সিদ্দিকী, সিদ্ধেশ্বরী গ্রামের মো. নাহিদুল ইসলাম ওরফে নাঈম, গুঞ্জর উত্তর গ্রামের কামাল হোসেন। তাঁদের মধ্যে শুকুর আলী রড দিয়ে এক সাংবাদিককে পেটাচ্ছেন—এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
গত বুধবার বিকেলে উপজেলা সদরের আল্লাহু চত্বরে আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়ার বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে স্থানীয় সাবেক সংসদ সদস্য কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদের অনুসারীদের বিরুদ্ধে হামলা চালানোর অভিযোগ ওঠে। ঘটনার পর বিএনপির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে আসিফের অনুসারীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় কয়েকজন সাংবাদিককে বেধড়ক পেটানো হয়। এতে সাত সাংবাদিকসহ অন্তত ৩৫ জন আহত হন।
ঘটনার পর থেকে প্রত্যক্ষদর্শী ও আহত সাংবাদিকেরা বলছেন, আসিফ মাহমুদের অনুসারীদের ওপর যারা প্রথমে হামলা করেছে, তারাই সাংবাদিকদের ওপর হামলা করেছে। আসিফের অনুসারীদের দাবি, সাংবাদিকদের ওপর হামলাকারীরা বিএনপি নেতা কায়কোবাদের অনুসারী। তবে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মহিউদ্দিন অঞ্জনের দাবি, সাংবাদিকদের ওপর হামলাকারীরা উপদেষ্টা আসিফের লোক।
মামলার সংক্ষিপ্ত এজাহারে উল্লেখ করা হয়, গত বুধবার বিকেলে সমাবেশের একপর্যায়ে কর্মসূচি পালনকারীদের ওপর বিক্ষোভ বিরোধীরা হামলা চালায়। এ সময় সংবাদকর্মীরা হামলার ফুটেজ সংগ্রহ ও ছবি তুলতে গেলে বিক্ষোভ বিরোধীদের মধ্য থেকে একদল সন্ত্রাসী সাংবাদিকদের ওপর হামলা করে। এ সময় বাদীসহ ৭ জন সাংবাদিক আহত হন। হামলার সময় সাংবাদিকদের ক্যামেরা, মুঠোফোন ও নগদ অর্থ ছিনিয়ে নেন আসামিরা।
মামলার বাদী মো. শাহে ইমরান প্রথম আলোকে বলেন, ‘সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে আমরা হামলার শিকার হয়েছি। আমাদের মারধরের পাশাপাশি ক্যামেরা ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে।’
মুরাদনগর থানার ওসি জাহিদুর রহমান বলেন, সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনার পরপরই আসামিরা এলাকা থেকে পালিয়ে গেছেন। যার কারণে এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি।