
স্থানীয়দের দাবি, পরকীয়া প্রেমিক আব্দুর রাজ্জাক জামায়াতের রোকন আবার কখনও তিনি বিএনপির ওলামা দলের স্থানীয় সভাপতি। একদিকে পরকীয়া অন্যদিকে রাজনৈতিক পরিচয়। তীব্র চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে এক ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর।
স্থানীয়দের দাবি, তালুক কররা জামে মসজিদের ইমাম আব্দুর রাজ্জাক-এর সঙ্গে এক প্রবাসীর স্ত্রীর দীর্ঘদিনের অনৈতিক সম্পর্ক প্রকাশ্যে আসে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও ও স্থানীয়দের বর্ণনায় জানা যায়, ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে এলাকায় উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে এবং রাজনৈতিক পরিমণ্ডলেও আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে।
প্রবাসী মো. ইদ্রিস আলী তিন বছর ধরে বিদেশে অবস্থান করছেন। এসময় তার স্ত্রীর সঙ্গে ইমাম আব্দুর রাজ্জাকের দুই বছরের ‘সম্পর্ক’ চলছিল বলে অভিযোগ করে এলাকায় গুঞ্জন ছড়ায়। স্থানীয় কয়েকজন জানান, বিষয়টি তারা দীর্ঘদিন ধরে লক্ষ করছিলেন এবং “ধরার জন্য অপেক্ষায় ছিলেন।”
সাবেক মেম্বার মো. ফরিদুল ইসলাম ফরিদ সাংবাদিকদের বলেন, “ঘটনাটি প্রমাণের জন্য আমরা নজরদারিতে রেখেছিলাম। সে নাকি বিএনপির ওলামা দলের সভাপতি। বিএনপির নাম ক্ষুন্ন করছে। আজ অবশেষে ঘটনার দিন গ্রামের মানুষসহ সরাসরি ধরে ফেলেছি।”
অভিযোগ রয়েছে, ইমাম আব্দুর রাজ্জাক ওই নারীকে পোল্ট্রি কিনে দেন এবং সেই খাবার প্রস্তুতের ১০ মিনিট পরই তারা প্রবাসীর বাড়িতে অবস্থানকালে স্থানীয়রা তাদের ধরে ফেলে। পরে এই মুহূর্তের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে গেলে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়।
স্থানীয়দের দাবি, অভিযুক্ত ইমাম জামায়াতের রোকন বলে পরিচিত নাকি। সে রাজনৈতিক সংগঠনের সাথে যুক্ত, এমন পরকীয়ার ভিডিও ভাইরাল হওয়ায় রাজনৈতিক অঙ্গনে সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
বেশ কয়েকজন গ্রামবাসী বলেন, রাজনৈতিক পরিচয় থাকলে কি ইচ্ছেমতো অনৈতিক সম্পর্ক করা যায়? এমন লোকেরা কীভাবে নেতৃত্বের পদে থাকতে পারে?
তবে রাজনৈতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য তাৎক্ষণিকভাবে পাওয়া যায়নি।
প্রবাসীর স্ত্রী জানান, তিনি স্বামীকে তালাক দেবেন না তবে এ সম্পর্ক আর চালাবেন না।
কিন্তু অভিযুক্ত ইমাম নারীটিকে বিয়ে করতে চান, যা নতুন করে বিরোধ তৈরি করেছে।
ওই নারীর বাবার বাড়ি ভবানীপুর ইউনিয়নে বলে জানিয়েছেন।
ঘটনার পর গ্রামের বেশ কয়েকজন মেম্বার, গণ্যমান্য ব্যক্তি ও স্থানীয়রা একত্রিত হয়ে সালিশ বসান। সেখানে বিতর্কিত একটি সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হয়, নারী যদি স্বামীকে তালাক দিয়ে ইমামকে বিয়ে না করে—তাহলে উভয়কেই গ্রাম ছাড়তে হবে।
সিদ্ধান্তটি সামাজিক মাধ্যমে নতুন করে তীব্র সমালোচনার সৃষ্টি করেছে। অনেকে দাবি করছেন, ব্যক্তিগত সম্পর্কের অভিযোগে কাউকে গ্রাম ছাড়ার হুমকি দেওয়া আইনসম্মত নয় এবং এটি সামাজিক অবক্ষয়েরই বহিঃপ্রকাশ।
ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পর গ্রামে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে। অনেকেই বলছেন, ধর্মীয় নেতা ও রাজনৈতিক পরিচয়ের মানুষ এমন ঘটনায় জড়ালে সমাজে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।
অন্যদিকে কিছু মানুষ দাবি করছেন, ঘটনার সত্যতা তদন্ত ছাড়া কাউকে দোষী বলা যায় না; ভিডিও দিয়ে সবকিছু যাচাই হয় না।