1. admin1@shimantoshohor.com : নিজস্ব প্রতিবেদক: : নিজস্ব প্রতিবেদক:
  2. nrakash261@gmail.com : সীমান্ত শহর ডেস্ক: : NR Akash
  3. admin@shimantoshohor.com : প্রকাশক : সীমান্ত শহর ডেস্ক: Islam
  4. alamcox808@gmail.com : বিশেষ প্রতিবেদক : Badioul Alam বিশেষ প্রতিবেদক
শিরোনামঃ
বঙ্গোপসাগরের নাইক্ষ্যংদিয়া উপকূলে বড়শি দিয়ে মাছ ধরার সময় ৫ জেলে আটক টুঙ্গিপাড়ায় আওয়ামী লীগ ও কৃষক লীগের দুই নেতার পদত্যাগ মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের গ্র্যাজুয়েট প্লাস ভিসা চালুর সম্ভাবনা ভারত থেকে হু হু করে পানি ঢুকছে বাংলাদেশে, প্লাবিত হতে পারে ৫ জেলা প্রধান উপদেষ্টাকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি দিলো ইউকেএম ডিজিএফআইয়ের হেডকোয়ার্টার ভেঙে দেওয়ার হুঁশিয়ারি নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর আগামী নির্বাচনে ভোটার সংখ্যা হতে পারে ১২ কোটি ৭৮ লাখ ৭৩ হাজার ৭৫২ হিরো আলমের জানাজা কাল বিকেল ৫টায় পুলিশের এডিসিকে ছুরি মেরে পালিয়ে গেল ছিনতাইকারী এনসিপির পরিচয়ে বেপরোয়া সম্রাট

যে কফির স্বাদ নিতে ২০০ মিটার পাহাড়ের ওপর উঠতে হয়

✍️ প্রতিবেদক: সীমান্ত শহর ডেস্ক:

  • আপডেট সময়ঃ শনিবার, ৯ আগস্ট, ২০২৫
  • ১৭ বার পঠিত

কিছু স্বাদ হয়তো জীবনের মতোই ঝুঁকিপূর্ণ, অনিশ্চিত, তবু নেশাময়। আর সেই স্বাদ নিতে যদি পাড়ি দিতে হয় প্রায় ২০০ মিটার উঁচু পাহাড়ি দেয়ালের রুক্ষ পথ (যা প্রায় ৭০ তলা বিল্ডিংয়ের সমান), যদি পায়ের নিচে থাকে শুধু কাঠের একটা পাতলা প্ল্যাঙ্ক, যদি কফির কাপটা ধরা হাতটাও কাঁপতে থাকে ঝড়ের মতো বাতাসে! তাহলে কেমন অনুভব হবে?

চীনের গুইঝৌ প্রদেশে এমনই এক জায়গা আছে, যেখানে কফি শুধু পান করা নয়, এক প্রকার জয় করা লাগে। ‘কুল প্লে ফরেস্ট পার্ক’ এর মধ্যে ২০১৯ সালে প্রতিষ্ঠিত এক ক্লিফসাইড ক্যাফে ঘিরে আজ পুরো দুনিয়ায় একটাই প্রশ্ন-এটা কি শুধু কফির টেস্ট, না মৃত্যুর স্বাদও লুকিয়ে থাকে এতে?

হ্যাঁ, ঠিক তাই। এই ক্লিফ ক্যাফেতে পৌঁছাতে হলে সরাসরি কোনো সিঁড়ি বা লিফট নেই। আপনাকে র্যাপেল করে নামতে হবে পাহাড়ি খাড়া দেয়াল বেয়ে। দড়ির ওপর দুলতে দুলতে যখন আপনি একসময় পৌঁছাবেন ক্যাফেটির কাঠের মেঝেতে, তখন আপনি নিজেকে দেখতে পাবেন; আকাশ আর গিরিখাদের মাঝখানে এক ঝুলন্ত বিন্দুতে।

কফি বিরতির সময় এর চারপাশের পাহাড় ও নদীর দৃশ্য মুগ্ধ করবে। চীনে এই ধরনের ঝুলন্ত একমাত্র ক্যাফে এটি। এটি প্রথম ২০১৯ সালে খোলা হয়েছিল। তারপর কিছু সংস্কারের পর সেবছরের জুন মাস থেকে এখন পর্যন্ত চলছে। এই ক্যাফের নাম চীনা ভাষায় জুয়ান ইয়া কা ফেই গুয়ান, যার ইংরেজিতে অর্থ দাঁড়ায় ‘ক্লিফ ক্যাফে’। ‘ক্লিফ ক্যাফে’ সুন্দর একটি ব্যানার ঝুলতে দেখা যায় পাহাড়ের ধারে।

কাঠের বসার ব্যবস্থা ছাড়াও, ক্যাফেতে কিছু ছবি ও সুভেনিয়র দিয়ে সাজানো। যা একে আরও আকর্ষণীয় করেছে। এখানে এসে বসার পরই সামনে এগিয়ে আসবে এক কাপ কফি। অনেকেই বলেন, ‘ওটা কফি না, সাহসের প্রতীক।’ প্রশ্ন থাকতে পারে, কফির স্বাদ কি সত্যিই অতুলনীয়?

এক কাপ কফির মূল্য ৩৯৮ ইউয়ান বা ৫৫ মার্কিন ডলার। মূল্য শুনে চোখ কপালে উঠলেও, জায়গাটির অবস্থান ও অভিজ্ঞতা বিবেচনায়; সেটিকে মূল্যবান মনে হতেই পারে। কেউ কেউ দাবি করতে পারেন, এটাই হয়তো তাদের জীবনের সবচেয়ে স্মরণীয় কফি। কেউ আবার বলে উঠতে পারেন, স্বাদে তেমন কিছুই ছিল না। আবার অনেকেই হয়তো বলবেন, সবটুকুই ছিল রোমাঞ্চের মোড়কে জড়ানো এক ধোঁকা। তবে এই ৩৯৮ ইউয়ান ফি-র মধ্যে আছে পার্কে এন্ট্রি ফি, বীমা, সরঞ্জাম ভাড়া, গাইড পরিষেবা এবং কফির মূল্য।

পাহাড়ে পৌঁছানোর পর, ট্যুর গাইড ইনস্ট্যান্ট কফি পাউডার এবং বরফের টুকরো ব্যবহার করে কফি পরিবেশন করেন। প্রতিটি গ্রাহক এক কাপ কফি খেতে পারেন। কাঠের তক্তার ওপর পা বাতাসে ঝুলিয়ে বসে কফি পান করেন এবং চারপাশের দৃশ্য উপভোগ করেম। তবে এক ঘণ্টার বেশি একজন পর্যটক এখানে সময় কাটাতে পারেন না।

কফির গন্ধ আর স্বাদের খুঁটিনাটি খুঁজতে গিয়ে জানা যায়, ক্যাফের বারে ব্যবহার করা হয় বিশেষ ব্লেন্ড কফি, যা পাহাড়ি পরিবেশে প্রস্তুত করা হয়। সুগন্ধি হলেও, অনেকের জন্য আসল স্বাদ ছিল ভয় আর ঝুঁকির মাঝে মাথা ঠান্ডা রেখে এক চুমুক।

এই প্রশ্নটাই আসল রহস্য তৈরি করে। ক্যাফেটির কাঠের মেঝে প্রায় ঝুলন্ত, চারপাশে কোনো দৃঢ় ব্যারিকেড নেই। মাত্র কয়েকটি দড়ি বাঁধা রয়েছে সুরক্ষার জন্য। যারা উচ্চতাভীতিতে ভোগেন, তাদের জন্য এই স্থান সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। কিন্তু যারা ভয়কে জয় করতে ভালোবাসেন, মৃত্যুর সম্ভাবনাকে কাছে টেনে আনতে ভালোবাসেন; তাদের জন্য এই জায়গা এক পবিত্র স্বপ্নের মতো।

তবে এখানে বড় কোনো দুর্ঘটনার খবর এখনো পাওয়া যায়নি, স্থানীয় গাইডরা যথেষ্ট প্রশিক্ষিত এবং প্রত্যেক অতিথির নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য ভালো মানের গিয়ার সরবরাহ করে। তবুও মাথার ভেতর একটাই প্রশ্ন ঘুরে, ‘একটি ভুল পদক্ষেপ, সারা জীবনের কান্না’।

সোশ্যাল মিডিয়ার এই যুগে আমরা অনেক কিছুই করি অভিজ্ঞতা আর ছবি তোলার জন্য। কেউ কেউ বলেন, ‘ছোট এ জীবনে ভয়কে আলিঙ্গন করতে হয়।’ কেউ বলেন, ‘এটা শুধু কফি না, এটা জীবনের মানে বোঝার একটা সুযোগ।’ আবার কেউ লিখেন, ‘এই কফির চুমুকেই আমি ভয় আর সাহসের সীমারেখা স্পর্শ করেছিলাম।’ এ যেন এক আধুনিক রিচুয়াল! যেখানে জীবনকে ঝুঁকিতে ফেলে জীবনেরই স্বাদ খোঁজে মানুষ।

এই ক্যাফেটির কফি হয়তো স্টারবাকস (বিশ্ববিখ্যাত কফি কোম্পানি ও ক্যাফে চেইন) এর মতো নয়, না আছে এতে কোনো সোনালি ল্যাটে আর নামকরা রোস্টিং। কিন্তু এতে আছে গল্প, আছে ভয়, আছে হাওয়া কাঁপানো উচ্চতা আর প্রতিবার চোখ বন্ধ করে এক পলকের সময় মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে পড়ার মতো অনুভব।

এটা কফি না, এটা এক দুঃসাহসের পরীক্ষা। আর যদি আপনি একদিন এই ক্যাফেতে যান, মনে রাখবেন একটি কাপের ভেতরে শুধু কফি থাকে না। থাকে হয়তো আপনার ভয়, স্মৃতি, আত্মজিজ্ঞাসা আর হয়তো, এক অনিশ্চিত পথ। আপনি কি সেই কফির স্বাদ নিতে প্রস্তুত? তাহলে যেতে পারেন সঙ্গীকে নিয়ে। রোমাঞ্চকর এক অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারেন।

পোষ্টটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো খবর
© 2025 Shimanto Shohor
Site Customized By NewsTech.Com